রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের চলতি মৌসুমের প্রথম হজ ফ্লাইট আগামী ৪ জুলাই। ওই দিন সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে ৪১৯ জন হজযাত্রী নিয়ে বিজি-৩০০১ ফ্লাইটটি জেদ্দার উদ্দেশে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছেড়ে যাবে।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী মাহবুব আলী এবং ধর্ম প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ বিমানবন্দরে উপস্থিত থেকে উদ্বোধনী ফ্লাইটের হজযাত্রীদের বিদায় জানাবেন।
প্রথম দিনে হজ ফ্লাইট বিজি-৩১০১ সকাল ১১টা ১৫ মিনিটে, বিজি-৩২০১ বিকেল ৩টা ১৫ মিনিটে, বিজি-৩৩০১ সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিটে এবং শিডিউল ফ্লাইট বিজি-০০৩৫ রাত ৮টা ১৫ মিনিটে জেদ্দার উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বে।
নির্ধারিত সময়ে, নির্বিঘ্নে হজ ফ্লাইট পরিচালনার সব প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই সম্পন্ন করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। চট্টগ্রাম এবং সিলেট থেকেও চলতি বছর যথাক্রমে ১৯টি ও ৩টি হজ ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে।
বাংলাদেশ থেকে এ বছর প্রায় ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন ধর্মপ্রাণ মানুষ পবিত্র হজব্রত পালনে সৌদি আরব যাবেন। চলতি বছর হজ ফ্লাইট ও শিডিউল ফ্লাইটে বিমানে যাবেন মোট ৬৩,৫৯৯ জন হজযাত্রী। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় যাবেন ৭,১৯৮ ব্যালটি, অবশিষ্ট ৫৬,৪০১ নন-ব্যালটি হজযাত্রী যাবেন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়।
এ বছর হজযাত্রীদের ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকা রুটে পরিবহনের জন্য বিমানের ৪টি নিজস্ব বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর উড়োজাহাজ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকা রুটে চলাচলকারী বিমানের নিয়মিত শিডিউল ফ্লাইটেও হজযাত্রীরা পবিত্র ভূমি জেদ্দায় যাবেন। ঢাকা থেকে জেদ্দা প্রতি ফ্লাইটের উড্ডয়নকাল হবে আনুমানিক ৭ ঘণ্টা।
দুই মাসব্যাপী হজ ফ্লাইট পরিচালনায় শিডিউল ফ্লাইটসহ মোট ৩৬৫টি ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে, যার মধ্যে ৩০৪ ‘ডেডিকেটেড’ এবং ৬১টি শিডিউল ফ্লাইট। ০৪ জুলাই থেকে ০৫ আগস্ট পর্যন্ত ‘প্রি-হজ্জ’-এ মোট ১৮৯ টি ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে (ডেডিকেটেড-১৫৭ এবং শিডিউল ৩২)। ‘পোস্ট-হজ্জ’-এ ১৪৭টি ফ্লাইট চলবে ১৭ আগস্ট থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত (ডেডিকেটেড-১৪৭ এবং শিডিউল ২৯) এর মধ্যে বাংলাদেশ থেকে মদিনা ১৮টি ও মদিনা থেকে বাংলাদেশে ১৫টি সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে। হজ ফ্লাইট পরিচালনার জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ঢাকা-জেদ্দা উভয় স্থানেই বিশেষ ব্যবস্থার আয়োজন করেছে।
প্রথমবারের মতো এ বছর কিছু ফ্লাইটের জেদ্দা বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন কার্যক্রম ঢাকা থেকেই সম্পন্ন করা হবে। এ উদ্দেশ্যে সৌদি আরবের একটি ইমেগ্রেশন টিম ঢাকায় অবস্থান করবে। এ বছর বিমান হজযাত্রীদের উড়োজাহাজের সামনের অপেক্ষাকৃত বড় ও আরামদায়ক নিশ্চিত আসন নেওয়ার ক্ষেত্রে ওয়ানওয়ে-তে ১০০ ডলার বা সমপরিমাণ টাকা এবং রির্টান যাত্রা (যাওয়া-আসা) ২০০ ডলার বা সমপরিমাণ টাকার বিধান রেখেছে।
এছাড়া হজযাত্রীদের টিকিট ক্রয় করার পর যাত্রার তারিখ পরিবর্তনের ক্ষেত্রে যাত্রার ২৪ ঘণ্টা পূর্বে ২০০ মার্কিন ডলার এবং যাত্রার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যাত্রা পরিবর্তনের জন্য ৩০০ মার্কিন ডলার বা সমপরিমাণ বাড়তি মাশুল আদায়ের বিধান রাখা হয়েছে।
এছাড়া নির্ধারিত ফ্লাইটে না গেলে ওই টিকিটের অর্থ ফেরতযোগ্য হবে না। বিমান কর্তৃক পরিচালিত ডেডিকেটেড হজ ফ্লাইটসমূহের চেক-ইন, ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস আনুষ্ঠানিকতা প্রতিবারের মতো এবারও শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সংলগ্ন আশকোনা হজ ক্যাম্পেই সম্পন্ন করা হবে।
চলতি বছর সৌদি সরকার নির্ধারিত বরাদ্দকৃত স্লটের বাইরে অতিরিক্ত কোন ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি দেবে না বলে জানিয়েছে।
প্রত্যেক হজযাত্রী বিনামূল্যে সর্বাধিক ২টি ব্যাগেজে ৪৬ কেজি মালামাল বিমানে এবং কেবিন ব্যাগেজে ৭ কেজি মালামাল সঙ্গে নিতে পারবেন। কোন অবস্থাতেই প্রতি ব্যাগেজের ওজন ২৩ কেজির বেশি হবে না। প্রত্যেক হজযাত্রীর জন্য ৫ লিটার জমজমের পানি ঢাকা/চট্টগ্রাম/সিলেট নিয়ে আসা হবে এবং প্রত্যেক হাজিকে ঢাকা/চট্টগ্রাম/সিলেট ফেরৎ আসার পর তা’ দেওয়া হবে। কোন অবস্থাতেই হাজিরা সঙ্গে করে বিমানে পানি বহন করতে পারবেন না।
যেকোন ধারালো বস্তু যেমন-ছুরি, কাঁচি, নেইল কাটার, ধাতব নির্মিত দাঁত খিলন, কান পরিষ্কারক, তাবিজ ও গ্যাস জাতীয় বস্তু যেমন- অ্যারোসল এবং ১০০ মিলির বেশি তরল পদার্থ হ্যান্ড ব্যাগেজে বহন করা যাবে না এবং কোন প্রকার খাদ্য সামগ্রী সঙ্গে নেওয়া যাবে না। ব্যাগেজ স্যুটকেস অথবা ট্রলিব্যাগ হতে হবে। যে কোন অবস্থায় গোলাকৃত, দড়িবাঁধা ব্যাগ ইত্যাদি বিভিন্ন আকৃতির ব্যাগেজ গ্রহণযোগ্য হবে না।
১৯৭৩ সাল থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত ১০ লাখ ৬০ হাজার ৪৪৪ জন হাজি হজপালনে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সেবা নিয়েছেন।