মক্কা নগরী (সৌদি আরব) থেকে: মক্কার গভর্নর যুবরাজ খালেদ আল ফয়সাল মসজিদে হারামের প্রধান ইমাম ও খতিব শায়খ আবদুর রহমান আস সুদাইসের কাছে কাবা শরিফের নতুন গিলাফ হস্তান্তর করেছেন। এ সময় কাবার প্রধান তত্ত্বাবধায়ক শায়খ সালেহ বিন যাইনুল আবিদিন আশ শিবলিসহ মসজিদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে ২৪ জুলাই মসজিদে হারামের তত্ত্বাবধায়ক কমিটির সদস্যরা তৈরিকৃত নতুন গিলাফ কারখানায় যেয়ে দেখে আসেন।
বিশেষ গাড়িতে করে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে নতুন গিলাফ উম্মুল জুদ এলাকার কারখানা থেকে মক্কায় এনে মসজিদের হারামে বিশেষ সংরক্ষিত জায়গায় রাখা হয়েছে। তবে প্রতীকী এক খণ্ড গিলাফ আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তরে মাধ্যমে গিলাফ হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।
কাবা শরিফে নতুন গিলাফটি পরানো হবে ১০ জিলহজ সকালে। ওই মক্কায় ঈদুল আজহা অনুষ্ঠিত হবে। অন্যদিকে হজপালনকারীরা হজের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে থাকবেন মিনায়। মিনা থেকে ফিরে হাজিরা নতুন গিলাফ দেখতে পাবেন।
কাবার ইমাম, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, আলেম-উলামা, কাবা ঘরের তত্বাবধায়ক, বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক কোরের সদস্য, সৌদি আরবের বিশিষ্ট নাগরিক এবং রাজ পরিবারের কয়েকজন সদস্য গিলাফ পরিবর্তনের কাজে অংশ নেবেন।
কাবার গিলাফ পরিবর্তনের কাজকে অত্যন্ত সম্মানজনক ও বরকতময় কাজ হিসেবে মনে করা হয়। এটি একটি উৎসবও বটে।
কাবা শরিফের গিলাফকে ‘কিসওয়াহ' বলা হয়। কালো রেশমি কাপড়ে তৈরি গিলাফটির গায়ে স্বর্ণের সুতা দিয়ে আরবি ক্যালিওগ্রাফিতে লেখা থাকে- ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলাল্লাহ, আল্লাহতায়ালা, সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি সুবহানাল্লাহিল আজিম, ইয়া হান্নান, ইয়া মান্নান'সহ আল্লাহতায়ালার পবিত্র নামসমূহ।
কাবাঘরের গিলাফ তৈরির কারখানাটি মক্কা নগরীর উম্মুল জুদ এলাকায় অবস্থিত। এ কারখানায় মদিনায় হুজরায়ে নববীর গিলাফও তৈরি করা হয়। কাবার গিলাফ তৈরিতে ১ কোটি ৭০ লাখ সৌদি রিয়াল ব্যয় হয়। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ৩৮ কোটি ১১ লাখ ৫৫ হাজার ৯১৪ টাকার মতো।
১৪ মিটার দীর্ঘ ও ৯৫ সেমি প্রস্থ ৪১টি বস্ত্রখণ্ড জোড়া দিয়ে তৈরি করা হয় গিলাফ। চার কোনায় সৌন্দর্যবর্ধন করে বৃত্তাকারে লেখা থাকে সূরা ইখলাস। রেশমি কাপড়ের নিচে দেওয়া হয় মোটা সাধারণ কাপড়। একটি গিলাফে ব্যবহৃত রেশমি কাপড়ের ওজন ৬৭০ কিলোগ্রাম ও স্বর্ণের ওজন ১৫ কিলোগ্রাম।
প্রতি বছর ১০ জিলহজ তারিখে কাবায় নতুন গিলাফ পরানো হয়। আর পুরনো গিলাফটি খণ্ড খণ্ড করে বিভিন্ন মুসলিম দেশের প্রধান, ইসলামি স্কলার, কৃতি ব্যক্তিদের উপহার হিসেবে দেওয়া হয়।