মক্কা নগরী (সৌদি আরব) থেকে: আরাফাতের ময়দানের পশ্চিম সীমান্তে অবস্থিত নামিরা মসজিদ থেকে হজের খুতবা দেওয়া হয়।
আবদুল আজিজ ইবনে আবদুর রহমান ইবনে ফয়সাল ইবনে তুর্কি ইবন আবদুল্লাহ ইবনে মুহাম্মদ আল সৌদ আধুনিক সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠাতা ও সৌদি আরবের প্রথম বাদশাহ।
১৯০২ সালে রিয়াদে তার পূর্বপুরুষদের অঞ্চল জয় করতে সক্ষম হন। ১৯২২ সালে তিনি নজদে নিজের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেন এবং ১৯২৫ সালে হেজাজ জয় করেন। তার বিজিত অঞ্চলগুলো নিয়ে ১৯৩২ সালে সৌদি আরব রাষ্ট্র গঠন করা হয়।
সৌদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর থেকে তারা মসজিদে হারাম ও মসজিদে নববীর সেবায় বিশেষ মনোযোগ দেন। সেই থেকে সৌদি শাসকরা নিজেদেরকে খাদেমুল হারামাইন শরীফাইন বলে পরিচিত করেন বিশ্ব দরবারে। সৌদি শাসন প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে হাজীদের সেবা এবং হজের খুতবা দানকারীকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়।
সারা বিশ্বের মানুষের দৃষ্টি থাকে হজের খুতবা কে দিচ্ছেন তার প্রতি। একাধারে ৩৫ বছর হজের খুতবা দিয়ে রেকর্ড গড়েছেন শায়য়খ আবদুল আজিজ। তিনি অবসর নেওয়ার পর থেকে কাউকে নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়নি খুতবার জন্য।
এ বছর (১৪৪০ হিজরি) আরাফাতের ময়দানে হজের খুতবা প্রদান করবেন শায়খ ড. মুহাম্মদ বিন হাসান আল-শাইখ।
তিনি সৌদি আরবের সর্বোচ্চ উলামা বোর্ডের সদস্য এবং খাদেমুল হারামাইন শরিফাইন হাদিস কমপ্লেক্সের প্রধান শায়খ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
২০১৬ সাল থেকে প্রতিবছর হজের নতুন খতিব নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। ২০১৬ (১৪৩৭ হি)সালে প্রথমবারের মতো হজের খুতবা প্রদান করেন শায়খ আবদুর রহমান আস-সুদাইস। ২০১৭ (১৪৩৮ হি) সালে শায়ক সাদ আশ-শাসরি ও ২০১৮ (১৪৩৯ হি) সালে শায়খ হুসাইন বিন আবদুল আজিজজ আলে শেখ।
এর আগে ১৯৮১ (১৪০২ থেকে ১৪৩৬ হি) সাল থেকে আরাফাতের ময়দানের খতিবের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন দৃষ্টিহীন ইমাম শায়খ আবদুল আজিজ। দীর্ঘ ৩৫ বছর পর তিনি ২০১৬ সালে বার্ধক্যজনিত কারণে অবসরে যান।
তার আগে শায়খ আবদুল আজিজ বিন আবদুল্লাহ বিন হাসান আলে শাইখ ১৩৭৭ হিজরি থেকে ১৪০১ হিজরি পযর্ন্ত হজের খুতবা দেন। মাঝে ১৩৯৯ হিজরিতে তিনি খুতবা দিতে পারেননি। ওই বছর খুতবা দেন শায়খ সালেহ আল হাইদান।
শায়খ আবদুল্লাহ বিন হাসান আলে শাইখ আরাফাতে খুতবা দেন টানা ৩২ বছর। ১৩৪৪ হিজরি থেকে ১৩৭৬ হিজরি পযর্ন্ত।
হজের খুতবায় সম-সাময়িক বিষয়ের দিক-নির্দেশনার পাশাপাশি মুসলিম উম্মাহর করণীয় সম্পর্কে আলোচনা হয়। খুতবায় মুসলিম বিশ্বের সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করেন হজের ইমাম।
এই দীর্ঘ সময় আরাফাতের দিন মসজিদে নামিরায় মুয়াজ্জিনের দায়িত্ব পালন করেছেন ফারুক হাজরাবি (১৪০৪-১৪৩৫ হি), সালেহ ফিদা (১৩৯৯-১৪০৩ হি), আলি আহমাদ মোল্লা (১৩৯৫-১৩৯৮ হি), আহমাদ হাজরাবি (১৪৩৪ হি), খালিদ হাজরাবি (১৪১৬ হি)। আর ইমাদ বাকরি ১৪৩৬ হিজরি থেকে মুয়াজ্জিনের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এবারও তিনি মুয়াজ্জিনের দায়িত্ব পালন করবেন।