বাংলাদেশ থেকে যাওয়া মোট হজযাত্রীর মধ্যে অর্ধেক সংখ্যককে সরকারি ব্যবস্থাপনায় নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আব্দুল্লাহ।
তিনি বলেছেন, ‘আগামী বছর থেকেই সরকারি ব্যবস্থাপনায় অর্ধেক হজযাত্রী নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। কীভাবে নেব, সেই অংকও মিলিয়ে ফেলেছি। তবে এটা নিশ্চিত, সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীর সংখ্যা বাড়বেই।’
সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে হজ ব্যবস্থাপনার সমাপ্তি বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
পবিত্র হজ পালনে হজযাত্রীদের দুর্ভোগ কমিয়ে স্বস্তি দিতে পেরেছেন দাবি করে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা ছাড়াই এবার হজ পালন করতে পেরেছেন হাজিরা। এবার ভিসা পেতে বিড়ম্বনায় যেমন পরতে হয়নি, তেমনি সৌদি আরব পৌঁছেও বাড়ি ভাড়া, কোরবানি দেওয়ার ক্ষেত্রে হাজিদের দুর্ভোগ কমাতে পেরেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।’
এবারই প্রথম কোনো বিশৃঙ্খলা এবং হয়রানি ছাড়াই হজযাত্রীরা নিরাপদে হজ শেষ করতে পেরেছেন। আর এটা সম্ভব হয়েছে সরকারের নানামুখী উদ্যোগের কারণে। ডিজিটাল নিবন্ধন, ইলেক্ট্রনিক হেলথ প্রোফাইল সিস্টেম চালু, সরাসরি হজ এজেন্সির কাছ থেকে টিকেট বিক্রির ব্যবস্থা করা, হজযাত্রীদের জন্য প্রতিটি জেলায় উন্নত প্রশিক্ষণ জোরদার, বাড়ি ভাড়ার ক্ষেত্রে আগে তথ্য সংগ্রহের কারণে বাড়ি ভাড়া নিয়ে কোনো ঝামেলা হয়নি। এমনকি হজের ব্যয়ের লাগাম টেনে ধরারও চেষ্টা করা হয়েছে এবারের হজে। এসব উদ্যোগের কারণে এবার সুষ্ঠুভাবে হজ পালন সম্ভব হয়েছে বলে উল্লেখ করেন শেখ মো. আব্দুল্লাহ।
তিনি বলেন, ‘সরকারের উদ্যোগের কারণে দিন দিন হজযাত্রীর সংখ্যা বাড়ছে। ২০০৯ সালে ৫৮ হাজার ৬২৮ জন হজ পালন করেন। আর ২০১৯ সালে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে মোট এক লাখ ২৭ হাজার ১৫২ জন হজ পালন করেছেন। এদের মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ছয় হাজার ৯২৩ জন হজ পালন করেছেন। সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে সংখ্যার দিক থেকে আকাশ পাতাল পার্থক্য। সরকারের চেষ্টা থাকবে, ভবিষ্যতে সরকারিভাবে হাজিদের সংখ্যা বাড়ানোর। বেসরাকারি পর্যায়েও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হবে। তবে এতো কিছুর পরেও সৌদি আরবে গিয়ে কিছু ছোটখাটো অভিযোগ তুলেছেন হাজিরা, সে সব অনেকটাই সঠিক নয়। তবে ভুলভ্রান্তি থাকলে তা পরের বছর কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা থাকবে।’
উল্লেখ্য, গত ৪ জুলাই থেকে শুরু হয়ে ৫ আগস্ট পর্যন্ত হজযাত্রার ফ্লাইট পরিচালিত হয়। আর ১৭ আগস্ট থেকে শুরু হয়ে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হজের ফিরতি ফ্লাইট চলে। এবার ৫৯৮টি হজ এজেন্সি হজ কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। আর এবার ১১৮ জন হজ পালনে গিয়ে মারা গেছেন। আটজন অসুস্থ হয়ে দেশে ফিরে এসেছেন।