নতুন মুসলিম স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল তৈরির লক্ষ্যে একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তে। এই চুক্তির ফলে অর্ধ শতাব্দী ধরে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলের অস্থিরতার অবসান হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
প্রেসিডেন্ট দফতরের মুখপাত্র হ্যারি রোক এবং আরেকজন গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী বং গো এক বিবৃতিতে সাংবাদিকদের জানান, স্বায়ত্তশাসিত হতে যাওয়া মুসলিম অঞ্চলটির নাম দেয়া হবে বাংসামরো।
বিবৃতিতে তারা বলেন, গত দুই দশক ধরে চার প্রেসিডেন্টের আমল থেকে মধ্যস্থতার মধ্যে দিয়ে অবশেষে এ সপ্তাহে দেশটির পার্লামেন্টের দুই কক্ষের অনুমোদন পায় চুক্তিটি।
মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ট মিন্দানাও অঞ্চলের বাংসামরোর জন্য আলাদা আইন ব্যবস্থার জন্য এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন প্রেসিডেন্ট দুতার্তে। এর মাধ্যমে দুতার্তে তার প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করেন।
মিন্দানাওর দক্ষিণ অঞ্চল থেকে নির্বাচিত হওয়া দেশটির প্রথম প্রেসিডেন্ট দুতার্তে এ আইন পাশের ব্যাপারে কংগ্রেসকে চাপ সৃষ্টি করেছিলেন। যার কারণে মূলত কয়েক দশক ধরে অঞ্চলটিতে মুসলিম স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী মরো ইসলামিক লিবারেশন ফ্রন্টের (এমআইএলএফ) সঙ্গে শান্তি স্থাপন সম্ভব হলো।
৬০ এর দশক থেকে স্বাধীন ভূমির জন্য লড়ছিল এমআইএলএফ। এরজন্য ফিলিপাইনি সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে ৩০ হাজার সশস্ত্র যোদ্ধা গড়ে তুলেছিল তারা। এখন মিন্দানাও মুসলিম প্রশাসকের মাধ্যমে এমআইএলএফের সঙ্গে শান্তি চুক্তির মধ্য দিয়ে অঞ্চলটিতে মুসলমানদের স্বায়ত্তশাসনের অধিকার দিয়ে মূলত শান্তি ফিরিয়ে আনলেন দুতার্তে।
এর ফলে দুই পক্ষেই বিশ্বাস করে এ অঞ্চলে চরমপন্থা রুখা সম্ভব হবে। সেইসঙ্গে সহিংসতা বন্ধ হয়ে বিনিয়োগ আকৃষ্ট অঞ্চল হিসেবে গড়ে ওঠে এবং দীর্ঘদিন ধরে অস্থিরতার ফলে দারিদ্রের কষাঘাত থেকে মুক্তি পাবে এখানকার মানুষ।
প্রেসিডেন্ট দুতের্তো মিন্দানাওয়ের মোরো ইসলামিক লেবারেশন ফ্রন্ট (এমআইএলএফ) এর প্রতি এ সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
চুক্তিতে স্বাক্ষরের পর এক বিবৃতিতে প্রেসিডেন্ট দুতার্তে এমআইএলএফ এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান নুর মিসৌরির উদ্দেশ্যে বলেছেন, নুর! আপনি আমার ভাই। আসুন, আমরা শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করি। আমরা এখন বৃদ্ধ হয়ে গেছি। এখন আপনার বা আমার জন্য যুদ্ধ সঠিক কোনো সিদ্ধান্ত নয়।