দেশের কওমি মাদরাসাসমূহে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তির সুবিধার্থে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে অফিস খোলার অনুমতি প্রদান করেছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন।
সোমবার (১ জুন) ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) আনিস মাহমুদ স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর সানুগ্রহ অনুমোদনক্রমে মসজিদ ও মাদরাসা সম্পর্কিত নির্দেশনা জারি করা হয়। দেশের বিশিষ্ট উলামায়ে কেরাম, মসজিদের খতিব, ইমাম ও মোয়াজ্জিনসহ সংশ্লিষ্ট সকলে নির্দেশনাসমূহ প্রতিপালনে সর্বাত্মক সহায়তা করায় প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন।
ইফার বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, দেশের কওমি মাদরাসাগুলোতে প্রতিবছর রমজান মাসের পরপর নতুন ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করা হয়ে থাকে। এ বছর ছাত্র-ছাত্রী ভর্তির কার্যক্রম অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে অফিস খোলার অনুমতি প্রদানের জন্য কওমি মাদরাসাসমূহের পক্ষ থেকে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বরাবর আবেদন করা হয়। প্রতিমন্ত্রী বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেন এবং প্রধানমন্ত্রী মাদরাসাসমূহে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তির বিষয়টি আন্তরিকতার সঙ্গে অনুধাবন করে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে অফিস খোলা রাখার সানুগ্রহ অনুমতি প্রদান করেছেন।
প্রধানমন্ত্রীর সানুগ্রহ অনুমতির পরিপ্রেক্ষিতে কওমি মাদরাসাসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য মাদরাসাসমূহে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তির কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে অফিস খোলা রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ করা হলো।
ইফার এই বিজ্ঞপ্তির আগে চলমান করোনা পরিস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য অফিস খোলা থাকবে বলে জানায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
সোমবার (১ জুন) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল খায়ের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাস জনিত রোগ (কোভিড-১৯) এর সংক্রমণ রোধে এবং পরিস্থিতি উন্নয়নের লক্ষে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। সীমিত আকারে সরকারি দপ্তরসমূহ খোলা রয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অফিস শুধুমাত্র প্রশাসনিক রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজনে ( ছাত্রভর্তি, বিজ্ঞানাগার, পাঠাগার, যন্ত্রপাতি রক্ষণাবেক্ষণ, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় ইত্যাদি) সীমিত আকারে খোলা রাখা যাবে। তবে অসুস্থ শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী, সন্তান সম্ভবা নারী এবং ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত হওয়া থেকে বিরত থাকবেন।
পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে সর্বাবস্থায় মাস্ক পরিধান এবং স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ/স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক জারিকৃত সকল স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে অনুসরণ করতে হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ১১ এপ্রিল রাতে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের উল্লেখযোগ্য আলেমদের উপস্থিতিতে কওমি মাদরাসার দাওরায়ে হাদিসকে মাস্টার্সের সমমান দেওয়ার ঘোষণা দেন। ১৩ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ (সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, শাখা-১) থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
পরে ‘আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ’-এর অধীন ‘কওমি মাদরাসাসমূহের দাওরায়ে হাদিসের (তাকমিল) সনদকে মাস্টার্স ডিগ্রি (ইসলামিক স্টাডিজ ও আরবি) সমমান প্রদান বিল, ২০১৮’ জাতীয় সংসদে পাস হয়।
আইনে বলা আছে, আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ তাদের কার্যক্রম বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে অবহিত করবে। সংস্থাটি দলীয় রাজনীতির ঊর্ধ্বে থাকবে।