বে-আমল বক্তার শাস্তি

  • ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ওয়াজ মাহফিল, ছবি: সংগৃহীত

ওয়াজ মাহফিল, ছবি: সংগৃহীত

ইসলামের প্রচার-প্রসার, বিস্তৃতি ও স্থায়িত্বে ওয়াজ মাহফিলের অবদান ও প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। সর্বস্তরের জনসাধারণকে ইসলামমুখী করার ক্ষেত্রে ওয়াজ মাহফিলের বিশেষ ভূমিকা আছে। কিন্তু আফসোসের বিষয়, বর্তমানে দ্বিনি মাহফিলগুলো তার ঐতিহ্য ও জৌলুস হারানোর পথে এবং ক্রমে তা মূল উদ্দেশ্য থেকে সরে যাচ্ছে।

আল্লাহতায়ালা বান্দার ভালো কাজের বিনিময়ে প্রতিদান ও পুরস্কার ঘোষণা করেছেন। তবে বিনিময় প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির বিষয়টি নিয়তের ওপর নির্ভরশীল। কোনো কাজ করার পেছনে একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি উদ্দেশ্য থাকলে পরিমাণে অল্প হলেও সেটিই তার মুক্তির পাথেয় হিসেবে বিবেচিত হবে। ওয়াজ মাহফিলসহ সব ধরনের ইবাদতে বিষয়টি প্রণিধানযোগ্য। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমার ঈমান খাঁটি করো, অল্প আমলই নাজাতের জন্য যথেষ্ট হবে।’ -মুসতাদরাকে হাকেম : ৪/৩৪১

বিজ্ঞাপন

বর্তমানে ওয়াজ মাহফিল সম্পৃক্ত কমিটি, বক্তা, শ্রোতা বেশির ভাগের পরিশুদ্ধ নিয়তের অভাব অনুমেয়। তাই তিন শ্রেণির উচিত পরিশুদ্ধ নিয়ত নিয়ে কিছু সমস্যা পরিহার করে ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করা। এক্ষেত্রে বক্তাদের দায় বেশি।

প্রায়ই দেখা যায়, বক্তার কারণে নানাবিধ সমস্যা ঘটছে। বিশেষ করে চুক্তি ও কন্ট্রাক্ট করে বক্তব্য দেওয়া, প্রদর্শনেচ্ছা, সঠিক ইলমের অভাব, ওয়াজের ছন্দ-গান ও কবিতাকে প্রাধান্য দেওয়া, মিথ্যা কল্পকাহিনি বর্ণনা করা, অহংকার (পোশাক, দেহের, কণ্ঠের) করা, কথা ও কাজের হেরফের করা এবং সময় সচেতনতার অভাব ইত্যাদি।

বিজ্ঞাপন

তাই ইসলামি স্কলাররা বলেন, বক্তাদের জন্য করণীয় হলো- বক্তৃতা ও আমলে ইখলাস থাকা, সহিহ ইলমের অধিকারী হওয়া, বিষয়ভিত্তিক বক্তব্য দেওয়া, বানোয়াট কিচ্ছা-কাহিনি না বলে কোরআন-হাদিসভিত্তিক কথা বলা, আমানতদারির সেঙ্গে উত্তমভাবে লেনদেন করা, ইসলামের বিধানাবলির পূর্ণাঙ্গ অনুসরণ করা, প্রতিশোধপ্রবণতাবিমুখ হওয়া, নির্লোভ তথা খাওয়া-পাওয়ার মনোভাব পরিহার করা ও অন্যের ভুলের সমালোচনা না করে শুধু সঠিক তথ্য তুলে ধরা।

মনে রাখতে হবে, নিজে সৎ কাজে অনুগত না থেকে অন্যদের সৎ কাজে আহবান করা এবং অন্যায় থেকে বিরত না থেকে নিষেধ করা একটি বড় অপরাধ, যার শাস্তি অত্যন্ত ভয়াবহ। এই মর্মে হজরত উসামা বিন জায়েদ (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, কেয়ামতের দিন এক ব্যক্তিকে আনা হবে। অতঃপর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে, যাতে আগুনে পুড়ে তার নাড়ি-ভুঁড়ি বের হয়ে যাবে এবং গাধা যেমন গম পেষার সময় ঘানির চারপাশে ঘুরতে থাকে, অনুরূপভাবে সেও তার নাড়ি-ভুঁড়ির চারপাশে ঘুরতে থাকবে। এ সময় জাহান্নামবাসীরা সেখানে জমা হয়ে জিজ্ঞেস করবে, হে অমুক! তোমার ব্যাপার কী? তুমি না আমাদের সৎ কাজের আদেশ করতে এবং অন্যায় কাজে নিষেধ করতে? জবাবে সে বলবে, আমি তোমাদের সৎ কাজের আদেশ করতাম, কিন্তু আমি নিজে তা করতাম না। আর তোমাদেরকে অন্যায় কাজে নিষেধ করতাম, কিন্তু আমি নিজে তা করতাম। -সহিহ বোখারি : ৩২৬৭