৯ জিলহজ আরাফা দিবস। এ দিনে হজের অন্যতম আমল আরাফার ময়দানে অবস্থান করা, এটি ফরজ। আরাফার ময়দানে সামান্যতম সময় অবস্থান না করলে হজ আদায় হবে না।
এই আরাফার ময়দান সংলগ্ন মসজিদে নামিরা থেকে সূর্য হেলে যাওয়ার পর সরকার নিযুক্ত ইমাম হজের খুতবা দিয়ে থাকেন। এ খুতবা দেওয়া সুন্নত।
ইসলামের ইতিহাসে মহানবী হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বপ্রথম অষ্টম হিজরিতে মক্কা বিজয়ের পর হজের আমির নিযুক্ত করেন স্থানীয় সাহাবি হজরত আত্তাব বিন উসাইদ উমাওয়ি রাযিয়াল্লাহু আনহুকে।
পরের বছর নবম হিজরি মদিনা থেকে নিজের প্রতিনিধি হিসেবে পাঠান হজরত আবু বকর সিদ্দীক রাযিয়াল্লাহু আনহুকে।
দশম হিজরিতে বিদায় হজে আরাফার ময়দানে কসওয়া নামক নিজের উটের পিঠে বসে সর্বপ্রথম খুতবা দেন হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।
এর পর থেকে প্রতি বছর মুসলিম খলিফা বা তার প্রতিনিধি এ খুতবা দিয়ে আসছেন।
এ বছর হজের খুতবা দেবেন মসজিদে নববির সিনিয়র ইমাম ও খতিব, মদিনা সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি শায়খ ড. হুসাইন আশ শায়খ। সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ শায়খ হুসাইনকে এ বছর আরাফার খতিব নিয়োগ করে রাজকীয় ডিক্রি জারি করেছেন।
এর আগে ১৩৪৪ হিজরি থেকে ১৩৭৬ হিজরি পর্যন্ত শায়খ আবদুল্লাহ বিন হাসান বিন হুসাইন আশ শায়খ, ১৩৭৭ থেকে ১৪০১ হিজরি পর্যন্ত শায়খ আবদুল আজিজ বিন আবদুল্লাহ বিন হাসান আশ শায়খ, ১৩৯৯ হিজরি শায়খ সালেহ বিন মুহাম্মদ আল লাহিদান, ১৪০২ থেকে ১৪৩৬ হিজরি পর্যন্ত শায়খ আবদুল আজিজ বিন আবদুল্লাহ আশ শায়খ, ১৪৩৭ হিজরিতে শায়খ ড. আবদুর রহমান সুদাইস ও ১৪৩৮ হিজরিতে শায়খ ড. সাদ বিন নাসের শাসরি হজের খুতবা দিয়েছেন।
আরাফার ময়দানে উপস্থিত সফেদ-শুভ্র কাপড়ের এহরাম পরিহিত হাজীদের সামনে দেওয়া হজের খুতবা বিশ্ব পরিস্থিতির কারণে বেশ তপর্যপূর্ণ। এ খুতবা যেমন সমবেত হাজীরা শোনেন, তেমনি শুনেন বিশ্ববাসী।
আরাফার ময়দানে উপস্থিত লাখ লাখ হাজী ও তাদের মাধ্যমে গোটা মুসলিম উম্মাহর উদ্দেশ্যে বছরের দীর্ঘ প্রত্যাশিত ভাষণটি যেন গোটা দুনিয়ার মানুষ সরাসরি শুনতে পারে, সেজন্য সৌদি সরকার বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করে। সরাসরি সম্প্রচার করা হয় টিভি ও ইন্টারনেটে। ফলে এ ভাষণের অপেক্ষায় চেয়ে থাকেন মানুষ। মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে শোনেন আরাফার ময়দানে প্রদত্ত সেই বিশেষ নির্দেশনামূলক খুতবা।
এবারের খুতবায় বিশ্ব শান্তি পরিস্থিতি, মানবাধিকারের মতো বিষয়গুলো প্রাধান্য পেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ, এবারের খুতবা প্রদানকারী খতিব পেশায় একজন বিচারপতি।