দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদরাসার সহকারী পরিচালক (মুঈনে মুহতামিম) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন মাদরাসার সিনিয়র মুহাদ্দিস আল্লামা শেখ আহমদ।
বুধবার (১৭ জুন) হাটহাজারী মাদরাসার মজলিসে শূরা দীর্ঘ বৈঠক করে এ সিদ্ধান্ত নেয়। ২০১৭ সালের পর শুরা অনুষ্ঠিত হলো। বৈঠকটি মাদরাসার মহাপরিচালক আল্লামা শাহ আহমদ শফীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয় এবং তিনি সভাপতিত্ব করেন। বৈঠক শেষে মাওলানা নোমান ফয়জী শুরা কমিটির সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। বৈঠকে অংশ নেওয়া একাধিক সদস্য বার্তা২৪.কমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সোমবার (১৫ জুন) বিকেলে হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা শেষে মাদরাসায় ফিরে তিনি মজলিশে শূরার বৈঠক আহ্বান করেন।
বৈঠকে মাদরাসার সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী কমিটি মজলিশে শূরার সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে শেখ আহমদকে সহকারী মুহতামিমের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ২০১৭ সাল থেকে এ দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী। ২০১৭ সালের জুলাই মাসে মজলিশে শূরার বৈঠকে আল্লামা শফীর দৈনন্দিন কাজে সহযোগিতা করার জন্য মাদরাসার সহকারী পরিচালক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।
বৈঠকে মাদরাসার বিগত দিনের হিসাব পর্যালোচনা করে দেখা হয়। সেই সঙ্গে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, আল্লামা শফী আমৃত্যু মাদরাসার মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। তিনি দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার অবর্তমানে মজলিসে শূরা সিদ্ধান্ত নেবে মহাপরিচালক নিয়োগের বিষয়ে।
হাটহাজারী মাদরাসার শূরা কমিটির সিদ্ধান্ত নিয়ে দেশের শীর্ষ পর্যায়ের কওমি মাদরাসা ও ইসলামী দলের নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক কৌতূহল রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ আল্লামা আহমদ শফী মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক হিসেবে কারও নাম ঘোষণা করতে পারেন- এমন গুঞ্জন শুরু হয়। গত মে মাসের শুরু থেকে মাদরাসার ভেতরে-বাইরে এ গুঞ্জন প্রকাশ্যে আলোচনা-সমালোচনায় রূপ নেয়। শেখ আহমদের নিয়োগের মধ্য দিয়ে এর অবসান হলো।
শুরার বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- ফরিদাবাদ মাদরাসার পরিচালক ও হাইয়াতুল উলইয়ার কো-চেয়ারম্যান আল্লামা আবদুল কুদ্দুস, ফরিদাবাদ মাদরাসার নায়েবে মুহতামিম ও বেফাকের যুগ্ম-মহাসচিব মুফতি নুরুল আমিন, খিলগাঁও মাখজানুল উলুম মাদরাসার পরিচালক মাওলানা নুরুল ইসলাম জিহাদী, মেখল মাদরাসার পরিচালক মাওলানা নোমান ফয়জী, নানুপুর মাদরাসার পরিচালক মাওলানা সালাহউদ্দিন নানুপুরী, হাটহাজারী ফতেহপুর মাদরাসার পরিচালক মাওলানা মাহমুদুল হাসান ফতেহপুরী, মাওলানা ওমর ফারুক বাথুয়া, মাওলানা আবুল কাশেম ফেনী ও হাটহাজারী মাদরাসার শিক্ষা পরিচালক মাওলানা নুর আহমদ।
শূরা বৈঠককে ঘিরে কোনো ধরণের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঠেকাতে হাটহাজারী উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পুলিশের অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন ছিল। শেষ পর্যন্ত কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই শুরার বৈঠক শেষ হয়েছে।