আরাফাতের ময়দানে অবস্থিত মসজিদে নামিরা থেকে দেওয়া হজের খুতবা শেষ করেছেন শায়খ আবদুল্লাহ বিন সোলায়মান আল মানিয়া।
বৃহস্পতিবার (৩০ জুলাই, ৯ জিলহজ) স্থানীয় সময় দুপুর সাড়ে বারোটায় সালাম দিয়ে হজের খুতবা শুরু করেন শায়খ মানিয়া। খুতবার শুরুতে তিনি আল্লাহতায়ালার প্রশংসা ও হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর দরুদ পাঠ করেন।
খুতবায় তিনি বৈশ্বিক মহামারি থেকে মুক্তি, গোনাহ মাফ, আল্লাহর রহমত কামনাসহ সম-সাময়িক প্রসঙ্গ নিয়ে নির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন।
খুতবায়, মানুষের অধিকার বিশেষ নারীর অধিকার ও উত্তরাধিকার সম্পত্তি বন্টনের ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন। সেই সঙ্গে ওয়াদাপালন, মাতাপিতার সেবা, সৎকাজের আদেশ, অসৎকাজের নিষেধ, মানবসেবা, রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা রক্ষায় নাগরিকদের সচেতন হওয়ার কথা বলেন।
শায়খ মানিয়া খুতবায় কোরআনে কারিমের বিভিন্ন আয়াত ও হাদিসের উদ্ধৃতি দিয়ে মানুষকে ইসলামের পূর্ণাঙ্গ অনুসারী হওয়ার আহ্বান জানান। ইবাদত-বন্দেগির বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করেন। আরাফাতের ময়দানে করণীয়সহ হজের পরবর্তী বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেন। নামাজ, পবিত্রতা অর্জন, রোগীর সেবা, মহামারি উপদ্রুত এলাকায় প্রবেশ না করা এবং ওইসব এলাকা থেকে অন্যত্র না যাওয়ার কথা বলেন।
লিখিত খুতবায় তিনি বর্তমান প্রেক্ষাপট নিয়ে সৌদি সরকারের গৃহীত হজের প্রেক্ষাপট নিয়ে কথা বলেন। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, খুব দ্রুত বৈশ্বিক এই মহামারি কেটে যাবে। আবার আগের মতো হজ ও উমরা যাত্রীদের আগমনে মুখরিত হবে পবিত্র এই ভূমি।
৩০ মিনিটব্যাপী খুতবার শেষাংশে সৌদি সরকারের জন্য দোয়া করেন, সেই সঙ্গে বিশ্বে শান্তি, সমৃদ্ধি কামনা করেন। রোগ মুক্তির জন্য দোয়া করেন। করোনাকে মহামারি উল্লেখ করে, এর থেকে বিশ্ববাসীর হেফাজতের জন্য দোয়া করেন। সর্বাবস্থায় আল্লাহর দরবারে যাবতীয় সমস্যান জন্য বেশি বেশি দোয়া করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
খুতবা শেষে জোহরের নামাজের আজান দেওয়া হয়। আজান দেন মসজিদের হারামের মুয়াজ্জিন শায়খ ইমাদ বিন আলি ইসমাইল। এর পর খতিব উপস্থিত হাজিদের নিয়ে দুই ইকামতে জোহর ও আসরের নামাজ আদায় করেন।
২৮ জুলাই খাদেমুল হারামাইন শরিফাইন সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ এক রাজকীয় ফরমানে শায়খ আবদুল্লাহ বিন সোলায়মান আল মানিয়াকে নিয়োগ দিয়েছেন। শায়খ আবদুল্লাহ বিন সোলায়মান আল মানিয়া হলেন সবচেয়ে বেশি বয়স্ক হজের খতিব।
হজের অন্যতম ফরজ হলো- ৯ জিলহজ আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করা। আরাফাতের ময়দানে হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিদায় হজের ভাষণ দিয়েছিলেন। সেই রীতি অনুযায়ী প্রতি বছর ৯ জিলহজ আরাফাত ময়দানে হজের খুতবা দেওয়া হয়।
এ বছর পবিত্র হজের আরবি খুতবা অন্যান্য ভাষার পাশাপাশি বাংলা ভাষায়ও অনুবাদ করে সম্প্রচার করা হচ্ছে। দুটি সম্প্রচার মাধ্যমে হজের খুতবা ১০টি ভাষায় অনুবাদ করে প্রচার করা হচ্ছে। বাংলা ছাড়াও বাকি নয়টি ভাষা হলো- ইংরেজি, মালয়, উর্দু, ফার্সি, ফ্রেঞ্চ, মান্দারিন, তুর্কি, রুশ ও হাবশি। ২০১৯ সালের হজে ৫ ভাষায় হজের খুতবার অনুবাদ প্রচারিত হয়েছিল।