ক্ষমতায় এলে পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি হবেই। তা কেউ আটকাতে পারবে না। বাংলায় এনআরসি হলে অন্তত দুই কোটি মানুষ বাদ পড়বেন।
এমনই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তার প্রেক্ষিতে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) পথে নেমেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। প্রতিবাদ মিছিল করেন উত্তর কলকাতার সিঁথির মোড় থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত।
মিছিল শেষে জনসভায় দিলীপ ঘোষের কথার কড়া প্রতিক্রিয়া দেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তিনি বলেন, রাজ্যে ক্ষমতায় এলে নাকি দু’কোটি বাঙালিকে তাড়াবেন। দুই কোটি তো পরের কথা, আগে বাংলার দু’জন মানুষের গায়ে হাত দিয়ে দেখাক।
এরপরই মুখ্যমন্ত্রীর কর্মসূচি নিয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, সবকিছুতেই পথে নেমে পড়া মমতা বন্দোপাধ্যায়ের স্বভাব। কিন্তু অন্যদের পথে নামতে দেখলেই পুলিশ প্রশাসন কাজে লাগিয়ে তাদের পথরোধ করেন তিনি। এনআরসি হলে বাংলার মানুষেরই ভালো হবে।
এর প্রেক্ষিতে মমতা বলেন, মানুষের ভালোর জন্য আমরা পথে আমি। সৃষ্টিকর্তা আমাদের সঙ্গে আছেন। এ কারণে সকাল থেকে তুমুল বৃষ্টি, কিন্তু মানুষের কথা বলতে পথে নামতেই বৃষ্টিও নেই।
এরপর মমতা বলেন, এ রাজ্যে এনআরসি হবে না। আমি বেঁচে থাকতে এনআরসি চালু করতে পারবেন না। আর আমি আমার আগামী চার প্রজন্মও এমন তৈরি করে যাচ্ছি যে তখনো কেউ এনআরসি চালু করতে পারবেন না।
এরপরই দিলীপ ঘোষের পাল্টা মন্তব্য, উনি (মমতা) বেঁচে থাকতে এনআরসি চালু হবে রাজ্যে এবং তা উনি দেখে যেতে পারবেন।
ওনার ক্ষমতা সবার জানা আছে। নোটবন্দির বিরোধিতা করেছেন। উনি (মমতা) জিএসটির বিরোধিতা করেছিলেন তা চালু হয়েছে। কাশ্মীরে ৩৭০ ধারার বিরোধিতা করেছেন। আমরা তুলে দেখিয়ে দিয়েছি। এমনকি তিন তালাকেরও বিরোধিতা করেছিলেন। তাই ওনাকে বেঁচে থেকে দেখে যেতে হবে পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি। গলা ধাক্কা দিয়ে বের করব বিদেশিদের। আসাম ছিল পরীক্ষামূলক। এবার গোটা দেশে হবে।
বিকেলের পর থেকে পশ্চিমবঙ্গ সরগরম হয়ে ওঠে দুই রাজনৈতিক দলের হেভিওয়েটদের বক্তব্যে। তবুও প্রশ্ন থাকে, আদৌ কি এনআরসি হবে পশ্চিমবঙ্গে? এমনই কথা কলকাতার অলিগলিতে। এ নিয়ে ‘চায়ে পে চর্চাও’ কম হচ্ছে না।
কারণ পরীক্ষামূলক এনআরসিতে আসামে ডাহা ফেল দিলীপ বাবুদের দল। বিদেশি বাছাই করতে গিয়ে তাদেরই সিংহভাগ ভোট ব্যাঙ্কে হাত পড়েছে আসামে। বাদ পড়েছে ১২ লাখ হিন্দুর নাম। পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি চালু হলে উগ্র হিন্দুত্বর ধ্বজাধারীদের গ্রহণযোগ্যতা থাকবে তো? চিন্তা কুড়ে খাচ্ছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের। তাই নিছক রাজনৈতিক হাওয়া গরম ছাড়া এ রাজ্যে এনআরসি চালু হবে না বলে মনে করছেন বিজেপি শিবিরের বিরোধী দলগুলো।