ঢাকাই সিনেমার আলোচিত চিত্রনায়িকা পরীমণির তিন দফা রিমান্ডের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা মামলার লিখিত আদেশে হাইকোর্ট বলেছেন, পুলিশ ডিপার্টমেন্টের বোঝা উচিত, মানুষের জীবন অত্যন্ত মূল্যবান। আইনি ভিত্তি ছাড়া পুলিশ রিমান্ড চাইতে পারে না।
মাদক মামলায় পরীমণিকে রিমান্ডে নেওয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে করা আবেদনের ওপর শুনানি শেষে লিখিত আদেশে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ইসলাম ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ কথা বলেন।
বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) ৫ পৃষ্ঠার ওই আদেশ প্রকাশিত হয়।
হাইকোর্ট বলেছেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে তদন্ত কর্মকর্তা পরীমণিকে তিনবার রিমান্ডে নিয়েছেন। যেখানে প্রথমবারই রিমান্ডে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার যথেষ্ট সময় পেয়েছেন। পুলিশ ডিপার্টমেন্টের বোঝা উচিত, মানুষের জীবন অত্যন্ত মূল্যবান। আইনি ভিত্তি ছাড়া পুলিশ রিমান্ড চাইতে পারে না। অথচ এ মামলায় পুলিশ পরীমণিকে তিনবার রিমান্ডে নিয়েছে, যা ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।
প্রসঙ্গত, পরীমণিকে গত ৪ আগস্ট রাতে তাঁর বনানীর বাসায় অভিযান চালিয়ে আটক করে র্যাব। পরে তাঁর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়। এই মামলায় পরীমণিকে তিন দফায় প্রথমে চার দিন, দ্বিতীয় দফায় দুই দিন ও তৃতীয় দফায় এক দিনসহ মোট সাত দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এই মামলায় ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে বিফল হয়ে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে জামিন আবেদন করেন পরীমণি। ২২ আগস্ট ওই আদালত ১৩ সেপ্টেম্বর শুনানির দিন রাখেন।
মহানগর দায়রা জজ আদালতের এই আদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করেন পরীমণি। শুনানি নিয়ে ২৬ আগস্ট হাইকোর্ট রুল দিয়ে ১ সেপ্টেম্বর শুনানির দিন রাখেন। অন্যদিকে নিম্ন আদালত জামিন শুনানির দিন এগিয়ে আনেন। ৩১ আগস্ট শুনানি নিয়ে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ পরীমণির জামিন মঞ্জুর করেন। পরদিন ১ সেপ্টেম্বর কাশিমপুর কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পান পরীমণি।
গত ৪ আগস্ট প্রায় চার ঘণ্টার অভিযান শেষে বনানীর বাসা থেকে পরীমণি ও তার সহযোগী দীপুকে আটক করে র্যাব। এ সময় পরীমণির বাসা থেকে বিভিন্ন মাদকদ্রব্য জব্দ করা হয়। পরে গত ৫ আগস্ট র্যাব-১ বাদী হয়ে মাদকদ্রব্য আইনে পরীমণি ও তার সহযোগীর বিরুদ্ধে বনানী থানায় মামলা দায়ের করে।