দীর্ঘ ১২ বছর পূর্বে কুষ্টিয়া মডেল থানার মাইক্রো চালক হত্যা মামলায় ৬ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে আসামিদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১ এর বিচারক তাজুল ইসলাম এ রায় দেন। জনাকীর্ণ আদালতে এই রায় ঘোষণার সময় শুধুমাত্র আসামি কাওছার আলীর উপস্থিতি ছিলেন। বাকি ৫ আসামি পলাতক।
সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- ঝিনাইদহের স্বরূপদহ গ্রামের বাসিন্দা রজব আলী জোয়াদ্দারের ছেলে মানিক জোয়াদ্দার (৩৭), মিরপুর উপজেলার ইশালমারী গ্রামের হাসান আলীর ছেলে কোরবান আলী (৪৭), সদর উপজেলার বাহির বোয়ালদহ গ্রামের আফিল উদ্দিন সর্দারের ছেলে আনোয়ার হোসেন ওরফে আনার (৫২), চরসাদিপুর গ্রামের নুজদার সেখের ছেলে সোহান (৩৭), মাগুড়া জেলার হাফিজুর মোল্লার ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন মান্না ওরফে সাগর (৩৭) এবং আদালতে উপস্থিত আলমডাঙ্গা উপজেলার হাটবোয়ালিয়া গ্রামের নফর আলী শাহের ছেলে কাওছার আলী (৪০)।
আদালতের মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালের ২৮ জুলাই রাত সাড়ে ৩টায় কুষ্টিয়া সদর উপজেলার আইলচারা গ্রামের স্টিল ব্রিজ নামক স্থানে মাইক্রো ছিনতাই চক্রের সদস্য আসামিরা পরস্পর যোগসাজসে পরিকল্পিতভাবে মাইক্রো চালক কাবিজুর রহমানকে (৪০) মাইক্রোসহ অপহরণপূর্বক ঘটনাস্থলে চালককে নামিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে শ্বাসরোধ ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে রক্তাক্ত জখমসহ মৃত্যু নিশ্চিত করে নিহতের লাশ ফেলে মাইক্রোটি নিয়ে পালিয়ে যায়। এঘনায় নিহতের ভাই মিরপুর উপজেলার পুটিমারি গ্রামের মৃত. আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে আব্দুর রউফ বাদী হয়ে ২৯ জুলাই অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে কুষ্টিয়া মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন।
মামলাটি তদন্ত শেষে ২০১০ সালে ২৩ সেপ্টেম্বর কুষ্টিয়া মডেল থানার উপ পুলিশ পরিদর্শক মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আজিজুল হক ৭ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে চার্জশিট দাখিল করেন আদালতে।
কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি এ্যাড. অনুপ কুমার নন্দী জানান, পুলিশের দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদনে বিজ্ঞ আদালত দীর্ঘ শুনানি শেষে ৬ আসামির বিরুদ্ধে মাইক্রো চালক কাবিজুর রহমান হত্যাকাণ্ডে জড়িত অভিযোগ সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন বিজ্ঞ আদালত। রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি কাওছার আলী ব্যতিত অপর ৫ আসামি আদালতে উপস্থিত না হয়ে পলাতক রয়েছেন। এছাড়া ছলেমান নামের এক আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।