ছাত্রলীগ নেতা হত্যায় ৯ জনের ফাঁসি, ২২ জনের যাবজ্জীবন

, আইন-আদালত

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজশাহী | 2023-08-26 15:56:52

রাজশাহীর চাঞ্চল্যকর ছাত্রলীগ নেতা শাহেন শাহ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে। এতে ৯ আসামির মৃত্যুদণ্ড এবং ২২ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (০৯ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজশাহী মহানগর দায়রা ও জজ আদালতের বিচারক এইচএম ইলিয়াস হোসাইন এ রায় ঘোষণা করেন।

নিহত শাহেন শাহ রাজশাহী কোর্ট কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি নগরীর গুড়িপাড়া এলাকার মৃত মোয়াজ্জেম হোসেনের ছেলে। তাঁর বড় ভাই রজব আলী বর্তমানে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) এক নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। আওয়ামী লীগ নেতা রজব আলী রাসিকের প্যানেল মেয়র-২ হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।

শাহেন শাহ হত্যা মামলায় মোট ৩১ জন আসামি ছিলেন। সবার সাজা হয়েছে। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের এক লাখ টাকা করে জরিমানাও করা হয়েছে। আর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তদের ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। আলোচিত এ মামলার এক নম্বর আসামি ছিলেন রাসিকের এক নম্বর ওয়ার্ডের বিএনপিপন্থী সাবেক কাউন্সিলর মুনসুর রহমান। রায়ে তাঁর মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অন্য আটজন হলেন- হাসানুজ্জামান হিমেল (৩৮), তৌফিকুল ইসলাম চাঁদ (৪৫), মো. মহাসীন (৫০), মো. সাইরুল (২৬), রজব (৩২), বিপ্লব (৩৫), গুড়িপাড়া এলাকার মো. মমিন (৩০) এবং আরিফুল ইসলাম (২৬)। এরমধ্যে মমিন ও আরিফুল পলাতক।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- বুলনপুর জিয়ানগর এলাকার লাল মোহাম্মদ ওরফে লালু (৩৮), মাহাবুল হোসেন (৪২), সাত্তার (৪৫), সাজ্জাদ হোসেন (৩৮), বখতিয়ার আলম রানা ওরফে রংলাল (৩৫), হাসান আলী (৩২), মাসুদ (৩৫), রাসেল (৩২), রাজা (৩২), মর্তুজা (৩০), সুমন (৩০), গুড়িপাড়া এলাকার আসাদুল (২২), আখতারুল (২৫), জইদুর রহমান (৪৮), ফরমান আলী (৪০), জয়নাল আবেদিন (২৫), রাজু আহমেদ (২৮), আকবর আলী (৪৫), সম্রাট হোসেন (১৯), টিয়া আলম (৩০), আজাদ হোসেন (৩৫) ও মো. মাসুম (২৬)। এদের মধ্যে আজাদ ও মাসুম পলাতক।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ২০১৩ সালের ২৮ আগস্ট গুড়িপাড়া সাকিনের ক্লাব মোড়ে শাহেন শাহকে একা পেয়ে আসামিরা তাকে কুপিয়ে এবং পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে শাহেন শাহকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ নিয়ে নিহতের ভাই নাহিদ আক্তার নাহান বাদী হয়ে ২৯ আগস্ট নগরীর রাজপাড়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় ২৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এছাড়া অজ্ঞাত আরও ২৫-৩০ জনকে আসামি করা হয়। তদন্তের পর ৩১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ।

আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোসাব্বিরুল ইসলাম জানান, গত বছরের ১১ নভেম্বর আদালতে উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষ হয়। এরপর আদালত গত বছরেরই ১০ ডিসেম্বর মামলার রায় ঘোষণার দিন ধার্য্য করেন। এরপর দফায় দফায় রায় ঘোষণার দিন পিছিয়েছে। প্রথম রায় ঘোষণার দিনের এক বছর পর রায় ঘোষণা করা হলো। মামলায় সাক্ষী ছিলেন ২৪ জন। আদালত ১৮ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর