আ.লীগ নেতা ইকবাল আজাদ হত্যায় ৪ জনের ফাঁসি, যাবজ্জীবন ১০

, আইন-আদালত

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম | 2024-07-03 20:42:39

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি এ কে এম ইকবাল আজাদ হত্যা মামলায় চার আসামিকে মৃত্যুদণ্ড এবং দশজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই রায়ে মামলার ১৩ আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (৩ জুলাই) চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মাদ হালিম উল্লাহ চৌধুরী এই রায় দেন।

বিষয়টি বার্তা২৪ কমকে নিশ্চিত করেছেন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অশোক কুমার দাস।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চারজন হলেন- সরাইল আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মো. রফিক উদ্দিন ঠাকুর, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহফুজ আলী, সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধার্ণ সম্পাদক ইসমত আলী ও মোকাররম হোসেন সোহেল।

যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- তৎকালীন সরাইল উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাফেজুল আসাদ সিজার, আব্দুল জব্বার, ইদ্রিস, বাবু, হারিস, বকুল, লিমন, আব্দুল্লাহ, শরীফ ও মিজান।

এর আগে, সোমবার (১ জুলাই) দুপুরে চট্টগ্রামের বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক হালিম উল্লাহ চৌধুরীর আদালতে হাজির হয়ে আগের দেওয়া জামিন বহাল রাখার আবেদন করেন মামলার আসামিরা। বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। বুধবার (৩ জুলাই) মামলার রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন আদালত।

ইকবাল আজাদ সরাইল উপজেলার আওয়ামী লীগের নেতা ছিলেন। ইকবাল আজাদের স্ত্রী উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম ওরফে শিউলি আজাদ বর্তমানে উপজেলা আওয়ামী লীগের আংশিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক। তিনি একাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত ৩১২ (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) মহিলা আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন।

জানা গেছে, ২০১২ সালের ২১ অক্টোবর সন্ধ্যায় ইকবাল আজাদ থানা ভবনের কাছে খুন হন। পরদিন তার ভাই এ কে এম জাহাঙ্গীর আজাদ বাদী হয়ে ২২ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও অজ্ঞাতনামা ৮-১০ জনের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

পরে এ মামলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হালিম (প্রয়াত), সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সাদেক মিয়া (প্রয়াত), তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক ও তৎকালীন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুর, যুগ্ম সম্পাদক তৎকালীন সদর ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল জব্বার, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের তৎকালীন কমান্ডার ইসমত আলী, ডেপুটি কমান্ডার আনোয়ার হোসেন, সদর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ইদ্রিস আলী, উপজেলা যুবলীগের তৎকালীন সভাপতি মাহফুজ আলী, সাবেক সহসভাপতি আল ইমরান, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাফিজুল আসাদ ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমানসহ ২৯ নেতাকর্মীকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ। আসামিদের মধ্যে দুজন মারা গেছেন, ছয়জন পলাতক রয়েছেন।

ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপ) অশোক কুমার দাশ বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা ইকবাল আজাদকে নির্মমভাবে খুনের মামলায় আদালত চারজনকে মৃত্যুদণ্ড ও ১০ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন। একই রায়ে আদালত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ১৩ জনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, মামলায় ২৯ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছিল। এদের মধ্যে দু’জন মারা গেছেন এবং ছয় জন পলাতক রয়েছেন। রায়ের সময় অন্য আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর