ব্লগার অভিজিৎ রায়ের বইয়ের প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপন হত্যা মামলায় আজিজ সুপার মার্কেট মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মুরসালিন আহমেদ সাক্ষ্য দিয়েছেন।
রোববার (২৯ ডিসেম্বর) সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমানের আদালতে তিনি এ সাক্ষ্য দেন। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ১৫ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল।
সাক্ষ্যে মুরসালিন বলেন, ২০১৫ সালের ৩১ অক্টোবর বিকেল ৪টার দিকে আমি জাগৃতি প্রকাশনীতে গিয়ে প্রকাশক দীপনের মাথা টেবিলে রাখা দেখি। কিছুক্ষণ পর পুলিশ এসে তাকে (দীপন) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। এরপর আবার পুলিশ আজিজ সুপার মার্কেটের মালিক সমিতির অফিসে এসে আমার ও মার্কেটের অফিস সহকারীর উপস্থিতিতে মার্কেটের ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার মনিটর, ডিভিআর, মাউস ও হার্ডডিস্ক আলামত হিসেবে জব্দ করে। আমি জব্দ তালিকায় স্বাক্ষর করি।
জবানবন্দি দেওয়ার পর আসামি পক্ষের আইনজীবীরা তাকে জেরা করেন।
গত ১৩ অক্টোবর দীপন হত্যা মামলায় আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সামরিক শাখার প্রধান ও বরখাস্ত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক জিয়াসহ আট জঙ্গির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন আদালত।
অপর আসামিরা হলেন- মইনুল হাসান শামীম ওরফে সামির ওরফে ইমরান, আবদুর সবুর সামাদ ওরফে সুজন ওরফে রাজু ওরফে স্বাদ, খাইরুল ইসলাম ওরফে জামিল ওরফে জিসান, আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব ওরফে সাজিদ ওরফে শাহাব, মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন ওরফে শাহরিয়ার, শেখ আবদুল্লাহ ওরফে জুবায়ের ওরফে জায়েদ ওরফে জাবেদ ওরফে আবু ওমায়ের ও আকরাম হোসেন ওরফে হাসিব ওরফে আবির ওরফে আদনান ওরফে আবদুল্লাহ।
চলতি বছরের ১৯ মার্চ ১০ আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করেন ট্রাইব্যুনাল। আসামি সৈয়দ জিয়াউল হক জিয়া ও আদনান পলাতক ছিলেন। ওইদিন তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল।
ব্লগার ও লেখক অভিজিৎ রায় এবং তার স্ত্রী নাফিজা আহমেদকে ২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি রাত সোয়া ৯টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পাশে কুপিয়ে জখম করে দুর্বৃত্তরা। তখন বইমেলা চলছিল।
আহত অবস্থায় তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর রাত সাড়ে ১০টার দিকে মারা যান অভিজিৎ।
এর আট মাস পর ২০১৫ সালের ৩১ অক্টোবর শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটের তৃতীয় তলায় নিজের অফিসে কুপিয়ে হত্যা করা হয় দীপনকে। দীপন ব্লগার অভিজিতের বইয়ের প্রকাশক ছিলেন।
দীপন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলার অধ্যাপক ও লেখক আবুল কাসেম ফজলুল হকের একমাত্র ছেলে।