সিপিবিকে নিশ্চিহ্ন করতেই বোমা হামলা- আদালতের পর্যবেক্ষণ

, আইন-আদালত

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-24 17:47:08

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সমাবেশে বোমা হামলা করেছিল হরকাতুল জিহাদ আল ইসলাম বাংলাদেশের (হুজি) সদস্যরা। তাদের ধারণা ছিল, কমিউনিস্ট পার্টি নাস্তিকদের দল। এ কারণে কমিউনিস্ট পার্টিকে নিশ্চিহ্ন করার উদ্দেশেই আসামিরা সেদিন এ বোমা হামলা চালিয়েছিলেন বলে রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেছেন আদালত।

সোমবার (২০ জানুয়ারি) এ মামলার রায় ঘোষণা করেন ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. রবিউল ইসলামের আদালত।

সিপিবির সমাবেশে বোমা হামলার মামলায় ১০ জঙ্গিকে ফাঁসির রায় দিয়েছেন আদালত। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় দুই আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।

রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেন, সিপিবির সমাবেশে বোমা হামলা করেছিল হরকাতুল জিহাদ আল ইসলাম বাংলাদেশের (হুজি) সদস্যরা। তারা মনে করেন, কমিউনিস্ট পার্টির লোকেরা কাফের, বিধর্মী, নাস্তিক, ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী নয়, ইসলাম ধর্মের শত্রু এবং আল্লাহ খোদা মানেন না। সে কারণে কমিউনিস্ট পার্টিকে নিশ্চিহ্ন করার উদ্দেশে আসামিরা সেদিন এ বোমা হামলা চালিয়েছিল।

আদালত আরও বলেন, তৎকালীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত এবং বিব্রত করাও এ হামলার উদ্দেশ্য ছিল। এ হামলার মাস্টার মাইন্ড ছিলেন অন্য মামলায় ফাঁসি কার্যকর হওয়া আসামি মুফতি হান্নান। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাসহ তারা অসংখ্য বোমা হামলা মামলারও আসামি। তাদের হামলায় অসংখ্য নিরীহ মানুষ মারা গেছেন। ২০০১ সালের ২০ জানুয়ারি বোমা হামলায় পাঁচজন নিরীহ ও নির্দোষ মানুষকে তারা হত্যা করেছেন। তাই এ জঙ্গিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত বলে আদালত মনে করে।

আরও পড়ুন: সিপিবির সমাবেশে বোমা হামলা মামলার আসামিরা আদালতে

২০০১ সালের ২০ জানুয়ারি পল্টন ময়দানে সিপিবির ডাকা লাল পতাকার সমাবেশে বোমা হামলা চালানো হয়। ওই সময় মঞ্চে ন্যাপ সভাপতি অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক বিমল বিশ্বাস, বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী সরদার ফজলুল করিম, অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর তৎকালীন সভাপতি সৈয়দ হাসান ইমাম, কমিউনিস্ট পার্টির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ছিলেন।

আরও পড়ুন: সিপিবি সমাবেশে হামলা: ১০ জনের ফাঁসি

ওই হামলায় খুলনা জেলার বটিয়াঘাটা উপজেলার সিপিবি নেতা হিমাংশু মণ্ডল, খুলনা জেলার রূপসা উপজেলার সিপিবি নেতা ও দাদা ম্যাচ ফ্যাক্টরির শ্রমিক নেতা আব্দুল মজিদ, ঢাকার ডেমরা থানার লতিফ বাওয়ানি জুটমিলের শ্রমিক নেতা আবুল হাসেম ও মাদারীপুরের মুক্তার হোসেন ঘটনাস্থলেই এবং খুলনা বিএল কলেজের ছাত্র ইউনিয়ন নেতা বিপ্রদাস আহত হয়ে ঢাকা বক্ষব্যাধি হাসপাতালে ওই বছরের ২ ফেব্রুয়ারি মারা যান। বোমা হামলায় আহত হন সিপিবির শতাধিক কর্মী।

এ সম্পর্কিত আরও খবর