পায়ের বুড়ো আঙুলে কিছুদিন পরপরই তীব্র ব্যথা। হাঁটা-চলার বেশ সমস্যা। ব্যথার ওষুধ খেয়েও যেন কমছে না ঠিক অতটা। ব্যথার ওষুধ খেয়ে খেয়ে আবার না বাঁধিয়ে ফেলেছেন পাকস্থলীতে আলসার! এরকম ঘটনা নিয়ে প্রায়ই অনেক রোগী ডাক্তারের কাছে এসে থাকেন। এই রোগটিকে মেডিকেলের ভাষায় বলে গাউট (Gout) বা গেঁটেবাত।
গাউট রোগের কারণ কী?
রক্তের ‘ইউরিক এসিড’ বেড়ে গেলে এই রোগটি হয়। ইউরিক এসিডের লবণ অস্থিসন্ধি বা জয়েন্টে জমা হয়। সবচেয়ে বেশি জমা হয় পায়ের বুড়ো আঙুলের গোড়ায়। এছাড়াও পায়ের গোড়ালী, হাঁটু ইত্যাদি জায়গাতেও এই ইউরিক এসিডের লবণ জমা হতে পারে এবং ব্যাথা করতে পারে।
যাদের এই রোগটি হয়, তারা ইউরিক এসিড নিয়ন্ত্রণে না রাখলে কিছুদিন পরপরই এই সমস্যায় আক্রান্ত হতে পারেন এবং ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া বিভিন্ন ব্যথার ওষুধ খেয়ে আরও বিভিন্ন নতুন রোগ বাঁধিয়ে বসেন।
কী পরীক্ষা করতে হবে?
রক্তের ইউরিক এসিডের মাত্রা পরীক্ষা করেই গাউট রোগ নির্ণয় করা যায়।
চিকিৎসা না করালে কী অসুবিধা হবে?
১. কিছুদিন পর পর ব্যথা হয়ে হাঁটা-চলায় অসুবিধা
২. কিডনিতে পাথর
৩. ব্যথার ওষুধ খেয়ে কিডনির ক্ষতি ও পাকস্থলিতে আলসার
৪. খুঁড়িয়ে হেঁটে মানসিক অবস্থার অবনতি
৫. অস্থিসন্ধি বা জয়েন্টের বিকৃতি ইত্যাদি
চিকিৎসা
ইউরিক এসিড নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কিছু ওষুধ আছে, যেমন- Allopurinol, Febuxostat ইত্যাদি। নিয়মিত এই ওষুধ খেয়ে গাউটের আক্রমণ থেকে বাঁচা যায়। এই ওষুধ বন্ধ করা যায় না। কারণ বন্ধ করলে আবার ইউরিক এসিড বেড়ে যেতে পারে। এবং কিছু খাবার অবশ্যই পরিহার করতে হবে।
যেসব খাবার এড়িয়ে চলতে হবে
• গরু-খাসির মাংস ও অন্যান্য লাল মাংস
• ইলিশ মাছ, চিংড়ি
• পালং শাক, ফুলকপি
• মদ
• ছোলাবুট জাতীয় ডাল
• সামুদ্রিক মাছ ইত্যাদি খাবার রক্তের ইউরিক এসিডের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। তাই গাউটের রোগীদের এসব খাবার এড়িয়ে চলাই উচিত।
লেখক: ডা. মুহম্মদ মুহিদুল ইসলাম (এমবিবিএস), ফ্যামিলি ফিজিশিয়ান, বায়োমেড ডায়াগনস্টিক এন্ড রিসার্চ ল্যাব।