যে ৭ লক্ষণে বুঝবেন সে আপনার প্রতি আগ্রহী না
বর্তমানে আমরা এমন এক পর্যায়ে আছি যেখানে আমরা যখন কারও সঙ্গে কথা বলি প্রায়শই অনুভব করি যে তারা আসলে শুনছেই না। আবেগের প্রতি যথাযথ মনোযোগের অভাব কিংবা ক্রমাগত নেতিবাচকতা ও বিভিন্ন কারণে খুব সহজেই সম্পর্কগুলো ধীরে ধীরে ম্লান হয়ে যায়। এই বৈশিষ্ট্যগুলো আপনার এবং অন্যদের মধ্যে অজান্তেই তৈরি হতে পারে। আসুন মনোবিজ্ঞানের মতে সম্পর্কের ৭টি লক্ষণের দিকে বিশেষভাবে নজর দেওয়া যাক, যেসব লক্ষণের কারণে মানুষ সম্পর্কে দিন দিন আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে।
সঙ্গীর প্রতি অমনোযোগী
দুজন কথা বলার সময় যখন কেউ একজন অমনোযোগী হয়, তখন অন্যজন অপমানিত বোধ করতে পারে। মনে হতে পারে সে মূল্যহীন। একসঙ্গে থাকার পরও যখন কেউ ফোন স্ক্রলিং কিংবা অন্য কোন কাজে ব্যস্ত থাকে এতে ক্রমাগত দূরত্ব সৃষ্টি হয়। সত্যিই এমন পরিস্থিতিতে সম্পর্ক তৈরি হওয়া কঠিন। কেউ আপনার প্রতি যত্নশীল, আপনার খেয়াল রাখছে মানুষ সাধারণত এটাই পছন্দ করে। সঙ্গীর প্রতি আপনার মনোযোগ দিন এতে সঙ্গী নিজেকে মূল্যবান ভাবতে শেখে।
আবেগহীন মনোভাব
যদি একজন ব্যক্তি তার অনুভূতি গোপন রাখে বা নিজের আবেগকে যথাযথভাবে প্রকাশ করতে পারে না, তাহলে অন্য ব্যক্তির সাথে কোন সম্পর্ক তৈরি হয় না। দুজনের আবেগ অনুভূতি সঠিকভাবে প্রকাশ পেলে একে অপরের প্রতি বিশ্বাস বাড়ে, তৈরি হয় ঘনিষ্ঠতা। অন্যথায়, এটি কেবল বন্ধুত্বের বন্ধনে পরিণত হতে পারে।
অতিরিক্ত ঈর্ষা
সামান্য ঈর্ষা স্বাভাবিক হতে পারে, কিন্তু যখন তা চরম আকার ধারণ করে, তখন তা অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণমূলক হয়ে ওঠে। সঙ্গী কোথায় আছে এবং তারা কার সাথে সময় কাটাচ্ছে তা নিয়ে ক্রমাগত প্রশ্ন সম্পর্ক তিক্ত হয়ে ওঠে। সঙ্গীর প্রতি ঈর্ষাও ভালোবাসার প্রতিফলন। তবে, অতিরিক্ত ঈর্ষা নিরাপত্তাহীনতা অবিশ্বাসের লক্ষণ। যেকোনো সম্পর্কের ভিত্তি হচ্ছে বিশ্বাস। সম্পর্কে বিশ্বাস না থাকলে তা সহজেই ভেঙে পড়ে।
নেতিবাচকতা পোষণ
যখন একজন ব্যক্তি সবসময় খারাপ আশা করে বা সবকিছুকে নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখে, তখন তার চারপাশে থাকা মানুষ ক্লান্ত হয়ে পড়ে। যারা কঠিন সময়েও ইতিবাচক থাকে, প্রিয়জনকে দূরে না সরিয়ে কাছে টানে মানুষ এমন লোকদের পছন্দ করে।
যোগাযোগে অদক্ষ
এমন মনে হতে পারে যে একজন ব্যক্তি যদি কথোপকথন চালিয়ে যেতে ব্যর্থ হন বা সঠিকভাবে যোগাযোগ স্থাপন করতে না পারে তবে সম্পর্কে দূরত্ব সৃষ্টি হয়। সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য এবং একে অপরকে আরও ভালভাবে বোঝার জন্য কথা বলা প্রয়োজন। দুজনের অবস্থা সুখ-দুঃখ ভাগ করে না নিলে সত্যিকারের মানসিক সংযোগ ঘটে না।। সুন্দর সম্পর্কের জন্য ভালো যোগাযোগ খুবই নিয়ামক।
লক্ষ্যহীন মনোভাব
যে ব্যক্তি লক্ষ্যহীন তিনি সহজেই সঙ্গীর কাছে মূল্যহীন হতে পারে। জীবনে কোনও দিকনির্দেশনা না থাকলে মানুষ খুব কমই সফলতা অর্জন করে।। মানুষ উচ্চাকাঙ্ক্ষা সম্পন্ন ব্যক্তি বা পরিশ্রমী ব্যক্তিদের প্রতি আগ্রহী হয়। সঙ্গীর সঙ্গে জীবনের উদ্দেশ্য ভাগ করে নেওয়া, কর্মপরকিল্পনা ঠিক করার মাধ্যমে সম্পর্ক অটুট থাকে।
অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ
অনেকেই মনে করে সঙ্গীকে অতিরিক্ত চাপে রাখলে তাকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে। যখন কাউকে চাপে রাখা হয় তখন সুস্থ আলোচনা এবং আপোষের কোনও সুযোগ থাকে না। মানুষ সাধারণত অতিরিক্ত চাপের প্রতি বিরক্ত বোধ করে। মানুষ নিজেই সিদ্ধান্ত নিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। একটি সম্পর্ক এমন হওয়া উচিত নয়, যাতে শুধুমাত্র সম্পর্ক টিকে রাখার জন্য আপনাকে প্রতিনিয়ত মানষিক চাপে থাকতে হয়।
তথ্যসূত্র: দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া