আমাদের দেশে শীতকাল মানেই বিয়ের মৌসুম। আর বিয়ে মানেই অতিরিক্ত খরচ। বিয়ে তো জীবনে একবারই হয়, কার না মন চায় একটু জাঁকজমকভাবে বিয়ে করতে। কিন্তু সবার পক্ষে তো আর তা সম্ভব নয়। বিয়ের কার্ড ছাপানো শুরু করে মধুচন্দ্রিমা— এক কথায় বিয়ে মানেই যেন মহাযজ্ঞ। আর এই মহাযজ্ঞের জন্য প্রথমেই প্রয়োজন অর্থের। তাই সাধ্যের মধ্যে যেন স্বপ্নের বিয়ের আয়োজন করতে পারেন তার জন্য রইলো কিছু টিপস।
১. প্রথমেই বাজেট ঠিক করুন। বিয়ে ঠিক হবার পর প্রথমেই ঠিক করে নিন আনুমানিক কী কী খরচ হতে পারে এবং আপনার কাছে ঠিক কত পরিমাণ টাকা আছে।
২. যে যে খাতে খরচ হতে পারে তার তালিকা তৈরী করুন। ভেন্যু ভাড়া, আলোকসজ্জা, ফুল, খাওয়াদাওয়া, গহনা, পোশাক, গাড়ি ভাড়া, বিয়ের কার্ড, উপহার, ফটোগ্রাফার এবং সবশেষে মধুচন্দ্রিমা। এই তালিকা অনুযায়ী আনুমানিক কোথায় কত খরচ হতে পারে তা একটি জায়গায় লিখে রাখুন। প্রয়োজনে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বসে পরামর্শ করে বাজেট তৈরী করুন।
৩. নানা উপায়ে খরচ কমান। সাদামাটাভাবে আইনি ভাবে বিয়ে সারতে পারেন। এতে সাশ্রয় তো হয়ই, সেই সঙ্গে ওই টাকা নবদম্পতির নতুন সংসারের শুরুতে অনেকটা কাজে লাগে।
এছাড়াও বাগদান, মেহেদী, হলুদ, আকদ, বউভাত— আয়োজন যত বাড়বে, খরচও তত বাড়বে। তাই অনুষ্ঠানের পরিমান কমিয়ে এক দিনেই দুই পক্ষের আত্মীয়-স্বজন সকলকে ডেকে নিয়ে অনুষ্ঠান সেরে ফেলতে পারেন। খরচও ভাগ হয়ে যায় দুই ভাগে।
৪. খাবারের পদ নির্বাচন করুন বুঝেশুনে। একগাদা পদ বাছাই না করে বিশেষ কিছু পদ মেনুতে রাখুন। বাজারের দিকটা নিজেরা নিজেরা দায়িত্ব নিয়ে করলেও অনেক ক্ষেত্রেই খরচ কমে আসবে।
৫. বিয়ের খরচের সিংহভাগটাই কিন্তু চলে যায় গহনার পিছনে। তাই ঠিক কী কী গহনা কিনতে চাইছেন আগে থেকে তার একটা পরিকল্পনা করে নিন। প্রয়োজনে বছরখানেকের মতো সময় নিন। এই সময়ের মধ্যে একটু একটু করে গহনা বানাতে থাকুন। তবে অবশ্যই আগে লকারে দেখে নিন, কী কী গহনা আছে আর কী কী নতুন করে বানাতে হবে।
৬. অনুষ্ঠান ভেন্যু ভাড়া, আলোকসজ্জা, গেট, ফটোগ্রাফি এবং গাড়ি খরচ ইত্যাদি বাঁচাতে অন্তত ৪-৫ জনের সঙ্গে দরদাম করে নিয়ে তার পরেই সিদ্ধান্ত নিন।
৭. সবচেয়ে জরুরী বিষয়, ঋণ এড়িয়ে চলুন। খুব বেশি বিপদ না হলে ঋণ না নেওয়াই উত্তম।
আগে বিয়েগেুলোতে আত্মীয়স্বজনরা সকলে মিলে পুরো বিয়ের সব দায়িত্ব নিতেন৷ কিন্তু বর্তমানে ব্যস্ততার কারণে তা আর সম্ভব হয়ে ওঠেনা। তাই এখন বিভিন্ন ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থাগুলোর প্রতি ঝুঁকেছে সবাই। তবে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের হাতে দায়িত্ব দিলেও অবশ্যই আগে থেকে সব কিছু আলোচনা করে নেয়া উচিত, না হলে উল্টো খরচ বাড়তে পারে।