মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইনভারোমেন্ট প্রোটেকশন অ্যাজেন্সির গবেষণালব্ধ তথ্য প্রকাশ করে, বাইরের পরিবেশের তুলনায় ঘরের ভেতরের আবহাওয়া অন্ততপক্ষে ১০০ গুণ বেশি দূষিত।
এমনটা হওয়ার পেছনে অনেকাংশে আমরা নিজেরাই দায়ী। ঘর সঠিকভাবে পরিষ্কার না করা, বিভিন্ন ধরণের কেমিক্যালযুক্ত পণ্য ব্যবহার করা ও সচেতনতার অভাবে ঘরের পরিবেশ খুব দ্রুতই দূষিত ও বিষাক্ত হয়ে ওঠে।
ঘরে থাকা কার্পেট, অ্যারোসল স্প্রে, এয়ার ফ্রেশনার এমনকি দেয়ার রঙ থেকেও নির্গত হয় বিষাক্ত ও সূক্ষ্ম কণা। এই সকল উপাদান ভলাটাইল অর্গানিক কম্পাউন্ডস (Volatile Organic Compounds – VOCs) নামে পরিচিত।
স্বাভাবিকভাবেই এই দূষণের ফলে শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যাসহ মাথাব্যথা, বমিভাব, অ্যালার্জিজনিত সমস্যা, শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দেওয়া শুরু হয়। নিজ ঘরকে দূষণমুক্ত রাখতে ও নিজেকে সুস্থ রাখতে চাইলে কয়েকটি নিয়ম মেনে চলা ভীষণ জরুরি।
বাসার প্রতিটি ঘরের প্রতিটি জানালা নিয়মিত খুলতে হবে। এতে বাইরের বাতাস ঘরে চলাচলের সুযোগ হবে এবং ঘরের ভেতরের বদ্ধ বাতাস বাইরে বেরোতে পারবে। রাতে জানালা বন্ধ রাখার প্রয়োজন হলেও সকালে অবশ্যই জানালা খুলে দিতে হবে। এছাড়া যদি জানালায় নেট দেওয়া থাকে, তবে সকালের দিকে কিছুক্ষণের জন্য হলেও নেট খুলে রাখতে হবে।
ঘরে আসবাবপত্র যত কম হবে দূষণ ও ধুলাবালি ততই কম হবে। আসবাবের কোনায় ও বিভিন্ন লুকায়িত স্থানে ধুলাবালি জমে থাকার ফলে তা খুব সহজেই ঘরের বাতাসের সঙ্গে মিশে যায়। যা প্রতিনিয়ত নিঃশ্বাসের সঙ্গে গ্রহণের ফলে ফুসফুসের সমস্যা দেখা দেয়।
ছোটখাটো ইনডোর প্ল্যান্ট ঘরের বিভিন্ন স্থানে এবং ঘরের সঙ্গে লাগোয়া বারান্দায় তুলনামূলক বড় গাছের টব রাখার অভ্যাস করতে হবে। গাছ বাতাসকে পরিশুদ্ধ করতে সাহায্য করে। এক্ষেত্রে ঘরের বাতাসকে কিছুটা হলেও দূষণমুক্ত করতে কাজ করবে।
শুধু ঘরের আসবাবপত্র নয়, ভেন্টিলেটরের দিকেও সমান নজর দিতে হবে। ভেন্টিলেটরের ছোট ও সংকুচিত স্থানে ঘর ও বাইরের ধুলাবালি অনেক বেশি আটকে থাকে। এই ধুলাবালি নিয়মিত পরিষ্কার না করা হলে ঘরের পরিবেশের সঙ্গে দ্রুত মিশে যায়।
বিছানার চাদর, বালিশের কভার, সোফাসেটের কভার, জানালার পর্দা ও কার্পেট- ঘরে থাকা এই সকল তন্তুজাতীয় জিনিসে ধুলা অনেক বেশি আটকে থাকে। খালি চোখে দেখা যায় না বলে আমরা হয়তো সেভাবে গুরুত্ব দেই না। খেয়াল করে দেখবেন, রোদের আলোতে বিছানা ঝাড়লে প্রচুর পরিমাণে ধুলা উড়তে দেখা যায়। যা একইসাথে ধুলা ও শরীরের মরা চামড়া। এই সূক্ষ্ম ধূলিকণাগুলোই পরবর্তিতে ঘরের পরিবেশকে দূষিত করে তোলে। তাই প্রতি ৫-৭ দিন অন্তর প্রতিটি তন্তুজাতীয় জিনিস অবশ্যই পরিবর্তন করতে হবে।