নতুন বছর শুরু হোক সাধারণ ‘রেজ্যুলিউশন’ নিয়ে

পরামর্শ, লাইফস্টাইল

ফাওজিয়া ফারহাত অনীকা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, লাইফস্টাইল | 2023-08-26 06:44:33

নতুন বছর মানেই নতুন রেজ্যুলিউশন, নতুনভাবে নতুন বছরকে সাজানোর পরিকল্পনা। কী করা হবে নতুন বছরে তার প্রস্তুতি নেওয়া। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি নেওয়া হয় আবেগের বশবর্তী হয়ে। যার ফলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রেজ্যুলিউশ অপূর্ণ রয়ে যায়।

এই সমস্যা থেকে বের হয়ে কীভাবে নতুন বছরটি বিগত বছরের চেয়ে ভালোভাবে কাটানো যাবে সেটার দিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন। সহজভাবে বলতে- আপনি ঠিক করলেন যে নতুন বছরে আপনি নিজেকে সুস্থ রাখবেন। নিজেকে সুস্থ রাখার বিষয়টি অনেক বড় পরিসরে আসে। বিধায় এর পেছনে যে কাজগুলো করা প্রয়োজন, তা ঠিকভাবে করা হয়ে ওঠে না।

রেজ্যুলিউশন ঠিক করার সময় এইভাবে না বলে ছোট পরিসরে নিয়ে আসতে হবে। যেমন- এ বছরে বেশি ফল ও সবজি গ্রহণ করবো। নিয়মিত দাঁতের চেকআপ করাবো। অল্প দূরত্বে হেঁটে যাতায়াত করবো। একদম সাধারণ ও ছোট এই রেজ্যুলিউশনগুলোই বড় ও ইতিবাচক ফল এনে দেবে।

এমন কয়েকটি রেজ্যুলিউশন এই ফিচারে উল্লেখ করা হলো সবার সুবিধার্থে। নিজেকে এই সকল রেজ্যুলিউশনের সাথে মানিয়ে নিতে পারলে শুরু থেকেই বছরটা কাটবে সুন্দরভাবে।

১. এতো বছরের খাদ্যাভ্যাসকে একদিনের মাঝেই পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। কিন্তু খাদ্যাভ্যাসের উপরেই সুস্থ থাকা অনেকখানি নির্ভরশীল। তাই খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনার মাঝে প্রথমেই রাখুন সবজি ও ফল নিয়মিত খাওয়া এবং বাইরের খাবার যথাসম্ভব কম খাওয়া। যখনই বাজার করবেন রংবেরংয়ের সবজি ও ফল কেনার চেষ্টা করবেন। এতে করে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসে আগ্রহ জন্মাবে।

২. ঢাকার শহরের দূষিত বাতাসে শ্বাস নেওয়া দায়। সুস্থ থাকার জন্য নিয়ম মেনে চললেও নিজেকে সুস্থ রাখা কষ্টকর হয়ে পড়ছে। নতুন বছরে তাই নিজেকে উপহার দিন গাছ। ঘরের জন্য ইনডোর প্ল্যান্ট, সহজে বেড়ে উঠবে এমন গাছ বারান্দার জন্য এবং ছাদের জন্য নিতে পারেন মাঝারি আকৃতির গাছ। যদি গাছের পরিচর্যার জন্য পর্যাপ্ত সময়ের অভাব থাকে তবে এমন গাছ নির্বাচন করুন, যার জন্য খুব বেশি পরিচর্যার প্রয়োজন হবে না।

new

৩. আপনি যেখানে থাকেন, অর্থাৎ আপনার বাড়ি ও ঘর আপনার উপর অনেকখানি প্রভাব তৈরি করে। এ কারণে নতুন বছরে নিজের সাথে নিজের ঘরকেও প্রাধান্য দিতে হবে। ঘর যতটা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকবে, নিজেকে ততই সুস্থ রাখা সম্ভব হবে এবং মন ভালো থাকবে। ঘরকে শুধু পরিষ্কার রাখাই যথেষ্ট নয়। সাথে ঘরে রঙিন ও উজ্জ্বল বর্ণের পর্দা ও কভার রাখতে হবে। সাথে সেন্টেড ক্যান্ডেল ঘরের পরিবেশকে বদলে দিতে পারে সম্পূর্ণভাবে।

৪. কাজ তো থাকবেই, কিন্তু তার মাঝ থেকে সময় বের করতে নিজের জন্য। বিরতি নিতে হবে, অবকাশ যাপন করতে হবে। তাই আগত বছরে ভ্রমণের পরিকল্পনা করুন। খুব দূরে হতে হবে তা নয়। নিজের সাধ্যের মধ্যে কোন কোন জায়গায় ঘুরতে যাওয়া সম্ভব,ছুটির দিন দেখে সেটা বের করে ফেলুন। যত বেশি ঘোরা সম্ভব হবে, মন প্রফুল্ল থাকবে এবং মনোযোগের সাথে নিজের কাজ করা সম্ভব হবে।

৫. বই পড়ার চল উঠেই গেছে এখন। প্রযুক্তি কেড়ে নিয়েছে বইয়ের প্রতি আকর্ষণ। সামনের বছরটিতে তাই বইয়ের দিকে ঝোঁকার চেষ্টা করুন। বই হাতে নিয়ে পড়ার অভ্যাসটি যদি অনেকদিন না থাকে তবে অডিওবুক শোনার মাধ্যমে এই অভ্যাসে ফিরে আসা যেতে পারে। শরীরচর্চা, রান্না কিংবা ঘর গোছানোর সময় অডিওবুক শোনার অভ্যাসটি বই পড়াকে নতুন রূপ দিবে।

new

৬. এবারের পয়েন্টটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, ডিক্লাটার। আপনার আশেপাশের সব অব্যবহৃত ও অপ্রয়োজনীয় জিনিস ডিক্লাটার করার পরিকল্পনা করুন সামনের বছর। যে জিনিসগুলো বছরের পর বছর ধরে ঘরে পরে আছে, সেগুলোকে সরিয়ে ফেললে শুধু যে ঘরে পর্যাপ্ত জায়গা তৈরি হবে তাই নয়। সাথে নিজেকেও ফুরফুরে মনে হবে। এছাড়া ঘরে যত বেশি জিনিস থাকবে, এতে ধুলাময়লা জমবে এবং অসুস্থতাও বেশি দেখা দেবে।

৭. রুটিন মাফিক জীবনে ব্যতিক্রম ও ভিন্ন কিছু করা হয়ে ওঠে কি কখনো! নতুন বছরে এই বিষয়টি মাথায় রাখুন। একেবারেই নতুন কোন কাজ করুন, শখ গড়ে তুলুন। সেটা হতে পারে ছবি আঁকা, ছবি তোলা, বই পড়া কিংবা নতুন স্থানে ভ্রমণ। মূল কথা, নিজের পছন্দ অনুযায়ী নতুন কোন কাজকে স্বাগত জানান নতুন বছরে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর