নির্দিষ্ট একটি বয়সের পর নানা ধরনের অসুস্থতা জেঁকে বসে। কিন্তু এখনকার সময়ে সে বয়স পর্যন্তও অপেক্ষা করতে হচ্ছে না। তরুণ বয়সেই দেখা দিচ্ছে হাই ব্লাড প্রেশার, ডায়াবেটিস, ওবেসিটির মতো সমস্যা।
ফলে সুস্থতার সাথে দীর্ঘায়ু পাওয়া বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে উঠছে বেশিরভাগ মানুষের জন্যেই। খেয়াল করে দেখবেন, এই সকল সমস্যা খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তনের মাধ্যমেই প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এটা নতুন কোন তথ্য নয়। নতুন তথ্য হলো ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং (Intermittent Fasting).
এই ফাস্টিংয়ের সাথে পরিচিত অনেকেই, ফলে এই খাদ্যাভ্যাসের ধরণটিও খুব একটা নতুন নয়। নতুন হলো এ সংক্রান্ত তথ্য। সাম্প্রতিক সময়ের এক গবেষণার তথ্যানুসারে ১৬-১৮ ঘণ্টা না খেয়ে থাকার অভ্যাস (ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং) গড়ে তুলতে পারলে পরিচিত ও আশঙ্কাজনক রোগের হাত থেকে খুব সহজেই নিজেকে নিরাপদ রাখা সম্ভব হবে। ফলে সহজ সূত্রানুসারে এর সাথেই পাওয়া যাবে দীর্ঘায়ু। এক্ষেত্রে শুধু লম্বা সময়ের জন্য ক্ষুধাভাবের লড়াই করে নিজেকে জেতাতে হবে।
দ্য নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনে প্রকাশিত প্রাণী ও মানুষের উপরে হওয়া এই গবেষণার তথ্য জানাচ্ছে, ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং রক্তচাপ কমায়, ওজন কমায় এবং আয়ু বাড়াতে অবদান রাখে। এমনকি বেশ কিছু চিকিৎসক ডায়াবেটিস, ক্যানসার, ওবেসিটির মতো জটিল রোগ প্রতিরোধে ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিংয়ের পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
গবেষণার প্রধান জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটির নিউরোসায়েন্স বিভাগের প্রভাষক মার্ক ম্যাটসন জানান, দিনের মাঝে ১৬-১৮ ঘন্টা না খেয়ে ৬-৮ ঘন্টা সময়ের মাঝে যাবতীয় খাবার খেয়ে ফেলার অভ্যাসটি স্বাস্থ্যের জন্য নানা দিক থেকেই উপকারী।
তবে গবেষক এটাও উল্লেখ করেছেন, ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিংয়ের ধরণটি একেবারেই নতুন হওয়ায় এর উপরে খুব বেশি পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়নি। এখনও পর্যন্ত ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালগুলো করা হয়েছে অতিরিক্ত ওজনধারী তরুণ ও মধ্যবয়স্কদের মাঝে। ফলে অন্যান্যদের মাঝে এই খাদ্যাভ্যাসের উপকারীতা কতটুকু প্রভাব রাখে কিংবা এই খাদ্যাভ্যাসের ফলে কোন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে কিনা, সেটা সম্পর্কে সঠিকভাবে বলা সম্ভব নয়। তবে যারাই ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং করতে আগ্রহী, অবশ্যই পুষ্টিবিদ ও চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েই ফাস্টিং করতে হবে।