বাসায় বসে কাজ করার বিষয়টি যতটা আরামদায়ক মনে হোক না কেন, আদতে ঠিক তেমনটা নয় মোটেও। বাসার পরিবেশের সাথে দীর্ঘসময় কাজ করা জন্য খাপ খাইয়ে নিতে হয় বহু কিছুর সাথে। তবে বাসায় কাজ করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি দেখা দেয় আই স্ট্রেইনের সমস্যাটি।
কর্মক্ষেত্রের নিয়মতান্ত্রিক পরিবেশ ছেড়ে ঘরোয়া এলোমেলো ও আরামদায়ক পরিবেশের কাজ করার মাঝে প্রধান পার্থক্য থাকে কাজের মাধ্যমে। অফিসে ডেস্কটপ/ ল্যাপটপের নির্দিষ্ট সেটিংয়ে, লাইটিংয়ে কাজ করায় চোখ অভ্যস্ত হয়ে ওঠে। ফলে ঘরে কাজ করায় যা চোখের উপর চাপ ফেলে দেয়। জানুন এক্ষেত্রে কীভাবে ঘরে কাজ করে আই স্ট্রেইনকে দূরে রাখতে পারবেন।
বাসায় বসে কাজ করার ক্ষেত্রে একটানা লম্বা সময় ধরে কাজ করা হয় কোন ধরনের বিরতি ছাড়াই। যার ফলাফলস্বরূপ দেখা দেয় ঘাড় ব্যথা, মাথা ব্যথা, পিঠ ব্যথাসহ আই স্ট্রেইনের সমস্যা। তাই কাজের ফাঁকে মনে করে অবশ্যই কিছুক্ষণের জন্য বিরতি নিতে হবে। স্ক্রিনের বাইরে চোখকে সময় দিতে হবে।
অনেকের অফিসিয়াল কাজ হাতে থাকা মোবাইল কিংবা ট্যাবেই সেরে নিতে পারেন। তাদের ক্ষেত্রে এই নিয়মটি মানা খুবই জরুরি। মোবাইল কিংবাট্যাব চোখের খুব বেশি কাছে কখনই আনা যাবে না। চোখের থেকে অন্তত ৫০-১০০ সেন্টিমিটার দূরত্বে রাখতে হবে কাজের গ্যাজেটটি।
খেয়াল করে দেখবেন, অফিসে লাইটিং হয় সবসময় উজ্জ্বল ও পরিষ্কার। এর কারণ হল উজ্জ্বল আলোতে কাজ করলে চোখের উপর চাপ কম পড়ে এবং কাজ করতে ক্লান্তি কম বোধ হয়। এদিকে বেশিরভাগ বাসাতেই লাইট রাখা হয় মাঝারি উজ্জ্বলতার। যা দীর্ঘসময় কাজ করার ক্ষেত্রে চোখের উপরে সহজেই চাপ ফেলে দিবে। যেহেতু বর্তমান পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিনের জন্য বাসাতেই কাজ করা প্রয়োজন হতে পারে, তাই ঘরের যেখানে বসে অফিসে কাজ করা হয়, সেখানে উজ্জ্বল আলোর জন্য লাইট বদলে বা বাড়িয়ে নিতে হবে।
চোখের সমস্যা না থাকলেও বাসায় বসে কাজ করার ক্ষেত্রে, যেকোন সাইটে কিংবা ওয়ার্ড ফাইলে কাজ করার ক্ষেত্রে ফন্ট সাইজ সাধারণের চাইতে কিছুটা বাড়িয়ে নিতে হবে। এতে করে চোখের উপর চাপ কম পড়ে এবং সহজেই লম্বা সময়ের জন্য কাজ করা সম্ভব হয়।
চোখ বন্ধ করে হাতের আঙ্গুলের সাহায্যে চোখের উপরের অংশে ধীরে ও আলতোভাবে ম্যাসাজ করার অভ্যাসটি এই সময়ে খুব উপকারে আসবে। বিশেষত যাদের মাইয়োপিয়া (দূরের জিনিস ঘোলা দেখার সমস্যা) রয়েছে তাদের জন্য বেশি প্রয়োজনীয়। দীর্ঘসময় কম্পিউটার কিংবা ল্যাপটপের স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকার দরুন চোখের উপরে যে বাড়তি চাপ দেখা দেয়, হালকাভাবে চোখে ম্যাসাজ করা হলে তা অনেকটা কমে আসবে।
প্রতিদিন কাজের মাঝে অন্তত দুইবার ২০-২০-২০ নিয়মটি মেনে চলতে হবে। এর জন্য ২০ ফিট দূরে থাকা কোন বস্তুর দিকে ২০ সেকেন্ড সময় নিয়ে তাকিয়ে থাকতে হবে। এভাবে ২০ মিনিট পর পুনরায় একই নিয়মের পুনরাবৃত্তি করতে হবে। এতে করে এক সেট পূর্ণ হবে।
যাদের পাওয়ার চশমা আছে কিন্তু নিয়মিত ব্যবহার করা হয় না, এ সময়ে চশমা ব্যবহারে হেলাফেলা না করে ব্যবহার করা শুরু করতে হবে। চশমা ব্যবহারে অনিয়ম করলে আই স্ট্রেইনের সমস্যা অনেক বেশি দেখা দেয়। বিশেষত যাদের মাইয়োপিয়ার সমস্যা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে চশমা ব্যবহার আবশ্যিক।