রমজানে স্বাভাবিক নিয়মেই প্রতিদিনকার অভ্যাসে পরিবর্তন আসে। সবচেয়ে বড় পরিবর্তনটা দেখা দেয় খাদ্যাভ্যাসে। ভোররাত থেকে পরবর্তী দিনের সন্ধ্যা পর্যন্ত লম্বা সময় না খেয়ে থাকার ফলে শারীরিক কার্যকলাপেও দেখা দেয় পরিবর্তন। এ সময়টাতে নিয়ম মেনে না চললে সহজেই অসুস্থ হয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে বিধায় কিছু নিয়ম মাথায় রেখে তবেই কাটাতে হবে পুরো রমজান মাসটি।
রাতে দেরি করে খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লে এবং সেহরি না খেলে বড় ধরনের ভুল করা হবে। প্রথমত, সেহরি সময়মত না খেলে রোজা হবে না। দ্বিতীয়ত, সারাদিন রোজা রাখার জন্য সেহরির খাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সেহরির খাবার থেকে শরীর তার প্রয়োজনীয় পুষ্টি ও শক্তি পায় পরবর্তী সারাদিনের জন্য। এছাড়া সেহরির সময়ে পান করা পানির মাধ্যমে শরীরে পানি ও আর্দ্রতার ভারসাম্য বজায় থাকে। তাই অল্প পরিমাণে হলেও প্রতিদিন অবশ্যই সেহরি খেতে হবে।
ঘরের কাজ কিংবা শরীরচর্চা যেটাই হোক না কেন, যথাসম্ভব কম ঘামার চেষ্টা করতে হবে। ঘাম যত বেশি হবে, শরীর থেকে তত বেশি পানি ও লবণ বের হয়ে যাবে। এতে করে খুব অল্প সময়ের মাঝেই শরীর দুর্বল বোধ হবে, পিপাসাভাব দেখা দেবে, মাথা ব্যথার প্রাদুর্ভাব দেখা দেবে এবং ক্ষেত্র বিশেষে বমিভাবও দেখা দিতে পারে। তাই রমজানের সময়ে এ বিষয়ে খেয়াল রাখা জরুরি।
সারাদিনে পানি পান করা হয়নি বলে ইফতারে একবারে ৩-৪ গ্লাস পরিমাণ পানি পান করলে অসুস্থ হয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকবে। ইফতারির সময়ে প্রথমে এক গ্লাস পরিমাণ পানি পান করে হালকা খাবার খেয়ে এরপর ফলের জুস বা শরবত পান করতে হবে।
পানি পানের মতই একই পরামর্শ থাকবে খাবারের ক্ষেত্রেও। সারাদিন রোজার পর ইফতারের জন্য আয়োজন করা হয় হরেক পদের খাবারের। সবই খাওয়া যাবে, তবে একবারে বেশি একেবারেই না। বিশেষভাবে রোজা ভাঙার পরপরই একবারে অনেক খাবার খাওয়া হলে অসুস্থ হয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে খুব বেশি। কারণ সারাদিন অভুক্ত থাকার পর পাকস্থলী একবারে অতিরিক্ত খাবার গ্রহণের জন্য প্রস্তুত থাকে না। এ কারণে ইফতারের সময় পরিমিত খাবার খেয়ে কিছুক্ষণ পর আবার পরিমিত খাবার খেতে হবে।
ইফতারের মেন্যুতে বিভিন্ন পদের তেলে ভাজা খাবারের চল ঐতিহ্যগতভাবে প্রচলিত একটি ধারা। কিন্তু এই অভ্যাসটি পাকস্থলী, খাদ্য পরিপাকতন্ত্র ও পুরো স্বাস্থ্যের জন্যেই ক্ষতিকর। সারাদিনের রোজা শেষে ইফতারে প্রয়োজন পুষ্টিকর ও প্রাশান্তিদায়ক খাবার। ওটস, দুধ, দই, চিড়া, সিদ্ধ আটার রুটি, নরম ভাত-ডাল হল সবচেয়ে সঠিক খাবার। এরপর হালকা কিছু তেলে ভাজা খাবার খাওয়া যেতে পারে।