রোজার মাসে খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তনজনিত কারণে বদহজমের সমস্যার পাশাপাশি সবচেয়ে বেশি দেখা দেখা কোষ্ঠ্যকাঠিন্যের সমস্যাটি। হুট করে প্রতিদিনের খাবার গ্রহণের নিয়মে বদল চলে আসায়, শরীরের সাথে মানিয়ে নিতে বেগ পেতে হয়। এ কারণে রমজান মাসের শুরুর দিকে অনেকেই বিড়ম্বনাযুক্ত এই সমস্যায় ভুগে থাকেন। বিশেষত বয়স্কদের মাঝে কোষ্ঠ্যকাঠিন্যের প্রাদুর্ভাব বেশি লক্ষ্য করা যায়। এ সমস্যাটি থেকে উত্তরণের জন্য সাধারণ কিছু নিয়ম মেনে চলাই যথেষ্ট।
কোষ্ঠ্যকাঠিন্যের সমস্যা দেখা দেওয়ার পেছনে মূল কারণ হিসেবে থাকে প্রতিদিনের খাবারে আঁশ জাতীয় খাবারের অভাব। মুখরোচক খাবারে প্রাধান্য বেশি দেওয়া হলে উপকারী ও আঁশ সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণে ঘাটতি থেকে যায় অনেক সময়। রমজানে ইফতারি, রাতের খাবার ও সেহরিতে সবজি, ফল, ওটস রাখার চেষ্টা করতে হবে।
ইফতারির পর থেকে সেহরির আগ পর্যন্ত অবশ্যই ৭-৮ গ্লাস পানি পান করতেই হবে। এক্ষেত্রে কোন ছাড় দেওয়া যাবে না একেবারেই। সারাদিনের পানির ঘাটতিসহ পরের দিনের জন্য পানি চাহিদা পূরণ করতে কয়েক ঘন্টার মাঝে মনে করে পানি পান অব্যাহত রাখতে হবে। পানি কম পান করা হলে শরীর শুষ্ক হয়ে কোষ্ঠ্যকাঠিন্যের সমস্যা দেখা দিবে।
রোজা থাকলে অনেকেই স্বাভাবিক হাঁটাচলা ও শরীরচর্চায় অবহেলা করতে। শুয়ে-বসেই পার করে দেন পুরো দিনটি। যা একেবারেই অনুচিত। ঘুম বেশি ঘাম যেন না হয় সেদিকে খেয়াল রেখে স্বাভাবিক হাঁটাচলা ও শরীরচর্চা চালিয়ে যেতে হবে। শারীরিক কার্যকলাপ চালু থাকলে কোষ্ঠ্যকাঠিন্য দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।
ইফতারির পর উষ্ণ পানীয় পান করে সতেজ অনুভব করতে চাইলে কফিকে বেছে নিন। কিছু ক্ষেত্রে কফি পরিপাকতন্ত্রের পেশীকে উজ্জীবিত করতে সাহায্য করে। এমনকি একটি গবেষণা থেকে দেখা গেছে, একবেলার খাবার গ্রহণের মত পরিপাকতন্ত্রের পেশী যেভাবে কাজ করে, কফি পানে অনেকের ক্ষেত্রে ঠিক একই ব্যাপার কাজ করে। সাধারণ পানি পানের চাইতে অন্তত ৬০ শতাংশ বেশি কার্যকর এবং ডিক্যাফ কফির চাইতে ২৩ শতাংশ বেশি।
শুধু রমজানের সময়েই নয়, প্রায়শ কোষ্ঠ্যকাঠিন্যের সমস্যা দেখা দিলেও প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণে জোর দিতে হবে। পাকস্থলীতে ব্যাকটেরিয়ার সমস্যাজনিত কারণে এমনটা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে প্রোবায়োটিকে থাকা ল্যাকটিক অ্যাসিড কোষ্ঠ্যকাঠিন্যের সমস্যা দূর করতে কাজ করে। খাদ্যাভ্যাসে প্রোবায়োটিক খাবার রাখতে চাইলে টকদই হবে সবচেয়ে সহজ সমাধান।