মায়েদের ব্যস্ততার যেন শেষ নেই। একটা কাজ শেষ হতে না হতেই আরেকটা কাজের চিন্তা শুরু। সবদিকে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে নিজের জন্যেই যেন সময় পাওয়া কষ্টকর হয়ে যায়। এতে করে ঘাটতি থেকে যায় নিজের যত্নে। প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় কাজগুলোও করা হয়ে ওঠে না ব্যস্ততার জন্য। অথচ সুস্থ থাকতে চাইলে প্রাথমিক কিছু বিষয়ে ছাড় দেওয়া যাবে না একদম।
বাসার সবার জন্য রান্না করা শেষে নিজের খাওয়ার ইচ্ছাটা বেশিরভাগ সময়েই নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়া অন্যান্য কাজে ব্যস্ততার জন্য নিজের খাবার খাওয়ার দিকে খেয়াল দিতে পারেন না অনেকেই। হাতের কাছে সামান্য কিছু খাবার পেলে সেটাই মুখে তোলা হয়। কিন্তু এতে করে পুষ্টির ঘাটতি রয়ে যায় শরীরে। ব্যস্ততা যতই থাকুক, খাবার খাওয়ার প্রতি যতই অনীহা কাজ করুক না কেন, নিয়মিত নিয়ম মেনে পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্য সম্পন্ন খাবার খাওয়ায় কোন অবহেলা করা যাবে না।
খাবার খাওয়ার অনিয়মের সাথে আরেকটি বড় অনিয়ম অনেকেই করে থাকেন, অপর্যাপ্ত পানি পান। ঘরে-বাইরের ব্যস্ততার সাথে তাল মেলাতে গিয়ে সারাদিনে পানি পান করার কথা একেবারে ভুলে বসেন বহু মা। পানি পানে অনিয়মজনিত কারণেই ইউরিন ইনফেকশনের মত সমস্যা বেশি দেখা দেয় নারীদের মাঝে। সকাল থেকে দিনের শেষ পর্যন্ত অন্তত ৭-৮ গ্লাস পানি অবশ্যই পান করতে হবে মনে করে।
‘ভাত খাওয়ারই সময় পাই না, আবার ব্যায়াম’ এমন কথা বলবেন অনেক মা। বিশেষত যাদের সন্তান ছোট এবং সংসার একা সামলাতে হয় তাদের জন্য প্রতিদিন শরীরচর্চার জন্য সময় বের করা অনেকটা হাস্যকর ব্যাপার। কিন্তু অন্য সকল কাজ, সব দিকে খেয়াল রাখার পাশাপাশি নিজের স্বাস্থ্যের ব্যাপারেও যত্নশীল হওয়া প্রয়োজন খুব বেশি। ব্যস্ততা থাকবেই, কিন্তু তাকে সাথে নিয়েই নিজেকে সুস্থ ও তরতাজা রাখার জন্য দৈনিক অন্ততপক্ষে ২০ মিনিট শরীরচর্চা করতে হবে। এতে করে দীর্ঘমেয়াদি সুস্থতার পাশাপাশি নিজেকে ফুরফুরে মনে হবে।
বিশ্রাম নেওয়ার বিষয়ে অবহেলা করার ফল হয়ত এক-দুই দিনে পাওয়া যাবে না। তবে লম্বা একটা সময় পর ঠিকই শরীর বিদ্রোহ ঘোষণা করবে এবং দুর্বল হয়ে পড়বে। খাবার খাওয়া, পানি পানের মত বিষয়গুলোর সঙ্গে নিজের জন্য প্রয়োজনীয় পরিমাণ বিশ্রামের দিকেও সচেতন হতে হবে।
অফিস ও ঘরের কাজের সাথে তাল মিলিয়ে ছুটোছুটি করার মাঝে নিজের জন্য একান্ত কিছু সময় বের করাও যে জরুরি, তা একেবারেই ভুলে যান মায়েরা। একান্ত সময় কাটানো শুধু নিজের জন্য নিজের মত করে। সেটা হতে পারে কোন কফিশপে কফি পান করে। পছন্দের কোন সিনেমা মুভি থিয়েটারে দেখে। অথবা একদম নিশ্চিন্তে নিজের মত কয়েক ঘন্টা ঘুমিয়ে। একান্তে নিজের মত সময় কাটানোর মাধ্যমে বহুদিনের ক্লান্তি ও অবসাদ খুব সহজেই দূর হয়ে যায়। যার ইতিবাচক প্রভাব মন ও শরীরের উপর দেখা দেয়। এ কারণে সপ্তাহে অন্তত একদিন নির্দিষ্ট সময়ে জন্য একান্ত কিছু সময় কাটানো প্রয়োজন।