রংপুরের মিঠাপুকুরে দোকানে চুরির অভিযোগে তছলিম উদ্দিন (৫০) নামে এক বৃদ্ধ নৈশ প্রহরীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। পেটানোর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি আলোচনায় আসে।
নিহত তছলিম উদ্দিন মিঠাপুকুর উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের শীতলগাড়ী গ্রামের মৃত নিজাম উদ্দিনের ছেলে। সে দীর্ঘদিন ধরে শঠিবাড়ি হাটের গালামাল পট্টিতে নৈশ প্রহরী হিসেবে বাজার দেখাশুনা করতেন।
শনিবার (৮ আগস্ট) ভোরে দোকান চুরির অভিযোগে স্থানীয়রা তাকে গণপিটুনি দেয়। এতে গুরুতর আহত অবস্থায় ওই নৈশ প্রহরীকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। একই দিন দুপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। চুরি ও গণপিটুনির ঘটনায় মিঠাপুকুর থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানা গেছে, শনিবার ভোরে মিঠাপুকুর উপজেলার শঠিবাড়ীহাটে সাহেব আলীর দোকান থেকে মালামাল চুরির সময় স্থানীয়রা এক চোরকে আটক করেন। আটক চোর রমজান আলী (১৪) পার্শ্ববর্তী পীরগঞ্জ উপজেলার জীবনানন্দ গ্রামের মোকছেদ আলীর ছেলে। তাকে মারধরের এক পর্যায়ে চুরির ঘটনার সঙ্গে নৈশ প্রহরী তসলিম উদ্দিনের জড়িত থাকার কথা জানায় ওই চোর।
বিক্ষুব্ধ জনতা হাটের দোকানের একটি খুঁটির সাথে নৈশ্য প্রহরী তছলিম ও চোর রমজান আলীর হাত-পা বেঁধে গণপিটুনি দেয়। এতে তছলিম উদ্দিন গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে গণপিটুনির খবর পেয়ে পুলিশ রমজান আলীকে আটক করে এবং গুরুতর আহত তসলিমকে রংপুর মেডিকেল হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
গতকাল রাতে নৈশ প্রহরী তসলিম উদ্দিনকে দেয়া গণপিটুনির ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে এলাকাবাসী ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান। একই সাথে আইন হাতে তুলে নিয়ে এভাবে পিটিয়ে হত্যায় ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে শঠিবাড়ীতে রংপুর-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তারা।
এ ব্যাপারে মিঠাপুকুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাফর আলী বিশ্বাস জানান, দোকান চুরির ঘটনায় একটি এবং গণপিটুনিতে নিহতের ঘটনায় পৃথকভাবে দুটি মামলা হয়েছে। ইতিমধ্যে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দুটি মামলার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার করা হবে।