বন্যা ও করোনা মোকাবিলায় সরকারি সহায়তার আওতায় এসেছে কম সংখ্যক ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার। অথচ বন্যায় ওই সকল এলাকার বেশিরভাগ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অন্যদিকে গোপালগঞ্জ ও চাঁদপুরে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সংখ্যা কম থাকা সত্ত্বেও ১০০ শতাংশের বেশি পরিবার এই সুবিধা পেয়েছে।
মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) ‘করোনা ও বন্যা মোকাবিলায় ত্রাণ কর্মসূচি : সরকারি পরিষেবার কার্যকারিতা’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল সংলাপে এসব তথ্য উপস্থাপন করেন।
সংলাপটি সিপিডি ও অক্সফাম ইন বাংলাদেশ-এর যৌথ উদ্যোগে এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের আর্থিক সহযোগিতায় ‘গণতান্ত্রিক সুশাসনে জনসম্পৃক্ত প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণ’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় সিপিডির পক্ষ থেকে বলা হয়, স্বল্প দারিদ্র্যের নীলফামারী, চাঁদপুর ও গোপালগঞ্জ অঞ্চলের অধিক সংখ্যক পরিবার বন্যা মোকাবিলায় জিআর চাল বিতরণ সুবিধার আওতায় ছিল। বিপরীতে কুড়িগ্রাম, জামালপুরের মতো উচ্চ দারিদ্র্যের অঞ্চলে কম সংখ্যক পরিবার এই সুবিধা পায়।
সিপিডির পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, চাল বিতরণে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের চাহিদার প্রতিফলন পাওয়া যায়নি। জামালপুর, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জে বেশি সংখ্যক পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হলেও, সেখানকার কম সংখ্যক পরিবার এই সুবিধার আওতায় ছিল। অন্যদিকে চাঁদপুর ও গোপালগঞ্জে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সংখ্যা কম থাকা সত্ত্বেও ১০০ শতাংশের বেশি পরিবার এই সুবিধার আওতায় ছিল।
সিপিডির প্রবন্ধে আরও বলা হয়, করোনাকালীন খাদ্য (চাল) সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে সুবিধাভোগী নির্বাচন প্রক্রিয়া সুষ্ঠু ছিল এবং প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত ও যোগ্য ব্যক্তিরাই নির্বাচিত হয়েছেন। তবে নগদ আড়াই হাজার টাকা সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে সুবিধাভোগী নির্বাচন প্রক্রিয়া সুষ্ঠু এবং স্বচ্ছ ছিল না। এ ক্ষেত্রে দলীয়করণ এবং স্বজনপ্রীতির অভিযোগ পাওয়া যায়।
এ সময় রংপুর বিভাগ থেকে সংযুক্ত বক্তারা বলেন, ত্রাণ বিতরণে বৈষম্য হয়েছে। দেখা গেছে পাঁচটি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মধ্যে হয়তো দুটি পরিবার সুবিধার আওতায় এসেছে বাকি তিনটি পরিবার সুবিধাবঞ্চিত হয়েছে। তবে তারা মনে করেন সরাসরি মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে মনিটরিং করলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে আর সুবিধাবঞ্চিত হতে হবে না।
সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্ব সংলাপে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়া, এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক মো. রাশেদুল ইসলাম, রংপুর জেলার জেলা প্রশাসক মো. আসিব আহসান, সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন, অক্সফাম ইন বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. দীপঙ্কর দত্ত এবং আরডিআরএস বাংলাদেশের পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুর রহমান প্রমুখ।
এছাড়া সংলাপে রংপুরের কমিউনিটি-ভিত্তিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, শিক্ষাবিদ, উন্নয়নকর্মী, এনজিও প্রতিনিধি, ব্যক্তিখাতের উদ্যোক্তা ও সমাজকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।