বরগুনার বহুল আলোচিত শাহনেওয়াজ রিফাত শরীফ হত্যা মামলার অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আসামির জামিনে থাকা ৮ ও কারাগারে থাকা ৬ জনকে আদালতে হাজির করা হয়েছে। আদালতে রায় পড়া শুরু হবে সকাল ১১টার দিকে।
মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বরগুনা জেলা শিশু আদালতের বিচারক মো. হাফিজুর রহমানের আদালতে তাদের হাজির হয়।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, রিফাত হত্যা মামলার অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আসামির বিরুদ্ধে ৭৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হওয়ার পর সকল আসামির পক্ষে-বিপক্ষে আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা। গত ১৪ অক্টোবর বুধবার আদালতে উপস্থাপিত রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিখণ্ডন শেষে এ রায়ের দিন ধার্য করেন আদালত।
রিফাত হত্যা মামলার অপ্রাপ্তবয়স্ক আসামিরা হলো- মো. রাশিদুল হাসান রিশান ফরাজী (১৭), মো. রাকিবুল হাসান রিফাত হাওলাদার (১৫), মো. আবু আবদুল্লাহ রায়হান (১৬), মো. ওলিউল্লাহ অলি (১৬), জয় চন্দ্র সরকার চন্দন (১৭), মো. নাইম (১৭), মো. তানভীর হোসেন (১৭), নাজমুল হাসান (১৪), রাকিবুল হাসান নিয়ামত (১৫), সাইয়েদ মারুফ বিল্লাহ (১৭), মারুফ মল্লিক (১৭), প্রিন্স মোল্লা (১৫) রাতুল সিকদার জয় (১৬) ও আরিয়ান হোসেন শ্রাবণ (১৬)। চলতি বছরের গত ৮ জানুয়ারি রিফাত হত্যা মামলার অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালত। এরপর ১৩ জানুয়ারি থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বরগুনার নারী ও শিশু আদালতের বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল বার্তা২৪.কমকে বলেন, মামলাটির রায়ের জন্য পূর্ব নির্ধারিত সময় বেলা ১১টার দিকে। আশা করি নির্ধারিত সময়েই রায় পড়া শুরু হবে।
গত বছরের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে শাহনেওয়াজ রিফাতকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। বিকেলে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে রিফাত মারা যান। ওই বছর ১ সেপ্টেম্বর ২৪ জনকে অভিযুক্ত করে প্রাপ্ত ও অপ্রাপ্তবয়স্ক দুই ভাগে বিভক্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দেয় পুলিশ। এর মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক আসামি ১০ জন এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক আসামি ১৪ জন।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর রিফাত হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক আসামিদের বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করেন বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান। রায়ে নিহত রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিসহ ছয়জনের ফাঁসির আদেশ দেন আদালত। বাকি চারজনকে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়।
ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হচ্ছেন রাকিবুল হাসান রিফাত ফরাজি, আল কাইউম ওরফে রাব্বি আকন, মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, রেজওয়ান আলী খান হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয়, মো. হাসান ও আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি।
খালাস প্রাপ্তরা হলেন রাফিউল ইসলাম রাব্বি, মো. মুসা, মো. সাগর, কামরুল ইসলাম সাইমুন। এদের মধ্যে মুসা এখনও পলাতক। উল্লেখ্য, এই হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হওয়ার ১৬ মাসের মধ্যে বিচার কার্য সম্পন্ন হবে।