ঢাকায় ফিরে এলো ইন্টারকন্টিনেন্টাল

ঢাকা, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-09-01 00:02:37

মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকেই বিখ্যাত ঢাকার ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেল। কয়েক দশকের বিরতি শেষে দেশের সবচেয়ে পুরাতন পাঁচ তারকা হোটেল ‘ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা’ আবারো চালু হলো।

চার বছরের সংস্কার শেষে পাঁচ তারকা মানের অভিজাত হোটেল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটায় (১২ সেপ্টেম্বর) উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  এরমধ্য দিয়ে ঢাকায় ফিরে এল ইন্টারকন্টিনেন্টাল।

মুক্তিযুদ্ধে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের অবদানের কথা স্মরণ করে অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, হোটেলটি আজকে নতুনভাবে সেজেছে। বাংলাদেশ এখন সারা বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। আমাদের দেশের যে আর্থ সামাজিক উন্নতি হচ্ছে তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এই হোটেলটি নবরূপে আজ সজ্জিত। আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি ইন্টারকন্টিনেন্টাল কোম্পানিকে যে তারা আবার ফিরে এসেছে। এখানে আসলে পুরানো স্মৃতি মনে পড়ে। কারণ বাংলাদেশে তখন এটা পূর্ব পাকিস্তান হোটেল বলতে এখন যেটা বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় সেটাই ছিল শাহবাগ হোটেল এবং ৬৬ সালে এই হোটেলটি কন্টিনেন্টাল হোটেল হিসেবে তৈরি হয়। তখন এই হোটেলটি ছিল একমাত্র ভালো হোটেল। সারাবিশ্বের নানাধরনের সাংবাদিকরা এখানে এসে উপস্থিত হয়েছিল।’

বাংলাদেশ যেন আর পিছিয়ে না যায়, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা যেন অব্যাহত থাকে সে কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রতিটি ক্ষেত্রে আমাদের যে অগ্রযাত্রা সে অগ্রযাত্রার ধারাবাহিকতাকে আমরা এগিয়ে নিয়ে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে পারি। আমাদের মনে রাখতে হবে লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে, অনেক ত্যাগ তিতিক্ষার বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। স্বাধীনতার সুফল প্রতিটি ঘরে ঘরে পৌঁছালে দেশের মানুষ উন্নত জীবন পাবে। প্রতিটি গ্রামই শহরে উন্নীত হবে। নাগরিক সুবিধা পাবে প্রতিটি মানুষ।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রী, সচিব, ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেল কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিসহ ঊর্ধ্বতন সরকারি ও বেসরকারি কর্মকর্তার উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, ১৯৬৬ সালে যাত্রা শুরু হয়েছিল দেশের প্রথম পাঁচ তারকা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের। হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল স্থপতি উইলিয়াম বি ট্যাবলার। প্রতিষ্ঠার পর এটি ইন্টারকন্টিনেন্টাল নামে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত চালু ছিল। এরপর স্টারউড কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি হওয়ায় ১৯৮৩ শেরাটন নামে শেরাটন হোটেল নামে যাত্রা শুরু করে। বাংলাদেশে ২৭ বছর হোটেল পরিচালনা শেষে শেরাটন ২০১০ সালের ১ মে বিএসএলকে হোটেলের ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে চলে যায়। এরপর হোটেলটির মালিক বাংলাদেশ সার্ভিসেস লিমিটেড (বিএসএল) ‘রূপসী বাংলা’ নামে হোটেলটি পরিচালনা করে আসছিল।  ২০১২ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি হোটেলের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান বিএসএল এর সঙ্গে ইন্টারকন্টিনেন্টালের হোটেল সংক্রান্ত ফের চুক্তি হয়। ৩০ বছরের জন্য লিজ নিয়েছে হোটেল চেইন- ইন্টারকন্টিনেন্টাল।

এরপর হোটেলটির মালিক বাংলাদেশ সার্ভিসেস লিমিটেড (বিএসএল) ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে হোটেলের সংস্কার কাজে হাত দেয়। ২০১৬ সালের প্রথম দিকেই এর সংস্কার শেষ হওয়ার কথা থাকলেও প্রায় দুই বছরেরও বেশি সময় পেরিয়ে এর কাজ শেষ হয়েছে। সংস্কার কাজে ব্যয় হয়েছে ৬২০ কোটি টাকা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, হোটেলটিকে আতিথিদের জন্য আরামদায়ক করতে এর রুম সংখ্যা ২৭২টি থেকে কমিয়ে ২২৬ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২০১টি এক্সিকিউটিভ রুম, পাঁচটি সুপিরিয়র স্যুইট, ১০টি ডিলাক্স স্যুইট, পাঁচটি ডিপ্লোম্যাটিক স্যুইট এবং পাঁচটি প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুইট থাকছে। এক্সিকিউটিভ রুমের আয়তন ৪০ বর্গমিটার এবং প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুইটের আয়তন ১৫০ বর্গমিটার।

এ সম্পর্কিত আরও খবর