মীর মশাররফ হোসেনের ১৭৩তম জন্মবার্ষিকী আজ

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজবাড়ী | 2023-09-01 03:03:06

আজ ১৩ নভেম্বর। আধুনিক বাংলা সাহিত্যের সমন্বয়ধর্মী ধারার প্রবর্তক, একবিংশ শতাব্দীর মুসলিম প্রতিভা বাংলা সাহিত্যের অমর দিকপাল কালজয়ী উপন্যাস ‘বিষাদ-সিন্ধু’র রচয়িতা মীর মশাররফ হোসেনের ১৭৩ তম জন্মবার্ষিকী।

১৮৪৭ সালের এই দিনে কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার গৌরী নদীর তীরে লাহিনীপাড়ায় বাবা সৈয়দ মীর মুয়াজ্জম হোসেন ও মা দৌলতন নেছার ঘরে তিনি জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯১১ সালের ১৯ ডিসেম্বর রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের পদমদী গ্রামে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর পর এখানেই মহান এই মনীষীকে সমাহিত করা হয়।

মীর মশাররফ হোসেনের ১৭৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তার সমাধিস্থল রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দির নবাবপুর ইউনিয়নের পদমদী গ্রামে আজ উপজেলা প্রশাসন, বাংলা একাডেমি, মীর মশাররফ হোসেন সাহিত্যে পরিষদ, মীর মশাররফ হোসেন কলেজ ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করেছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার আম্বিয়া সুলতানা বার্তা২৪.কমকে জানান, সাহিত্য সম্রাট মীর মশাররফ হোসেনের ১৭৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁর সমাধিস্থলে উপজেলা প্রশাসন ও বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলি এবং দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।

মীর মশাররফ হোসেন ডিগ্রী কলেজ, মীর মশাররফ হোসেন সাহিত্য পরিষদসহ স্থানীয় বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোও সামাজিক দূরত্ব বজায়ে রেখে দিবসটিকে ঘিরে পৃথক পৃথক কর্মসূচি পালন করবে বলে নিশ্চিত করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আম্বিয়া সুলতানা।

বাংলা একাডেমির প্রোগ্রাম অফিসার ও মীর মশাররফ হোসেন স্মৃতি কেন্দ্রের দায়িত্বরত কর্মকর্তা শেখ ফয়সাল আহমেদ বার্তা২৪.কমকে বলেন, মীর মশাররফ হোসেনের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলা একাডেমি মীরের সমাধিস্থল স্মৃতি কেন্দ্রে একটি পূর্ণাঙ্গ বই বিক্রয় কেন্দ্রের উদ্বোধন করার কথা ছিল। কিন্তু করোনার কারণে সেটি সম্ভব হচ্ছেনা। তবে খুব দ্রুতই এটি বাস্তবায়ন করা হবে।

এই সময় তিনি আরো জানান, এরই মধ্যে বাংলা একাডেমির বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। যার কারণে এ বছর শুধু শ্রদ্ধাঞ্জলি ও দোয়া-মাহফিলের মধ্যে দিয়েই সীমিত আকারে সামাজিক দূরত্ব বজায়ে রেখে উদযাপন করা হবে মীর মশাররফ হোসেনের ১৭৩ তম জন্মবার্ষিকী।

উল্লেখ্য, মীর মশাররফ হোসেন ছিলেন মুসলিম বাংলা সাহিত্যের অমর স্রষ্টা ও অগ্রপথিক। তাঁর পূর্বে কোনো মুসলমান সাহিত্যিকই এত বিপুলভাবে সাহিত্যে ক্ষেত্রে অগ্রসর হননি। বাংলার মুসলমান সমাজের দীর্ঘ অর্ধ শতাব্দীর জড়তা দূর করে আধুনিক ধারায় ও রীতিতে সাহিত্য চর্চার সূত্রপাত ঘটে তাঁর শিল্পকর্মের মাধ্যমে। তাঁর সৃষ্টি কর্ম বাংলার মুসলমান সমাজে আধুনিক সাহিত্য ধারার সূচনা করে। তিনি সাহিত্যের সকল শাখায় অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন। এদিক থেকে তিনি মুসলিম জাগরণের পথিকৃৎ।

তাঁর লেখা উপন্যাস ‘উদাসী পথিকের মনের কথা’ (১৮৯০), ‘গাজী মিয়ার বস্তানী’, ‘জমিদার দর্পণ’ (১৮৭৩), আত্মকাহিনীমূলক রচনাবলী ‘আমার জীবনী’, ‘বিবি কুলসুম’ (১৯১০), সহ বিভিন্ন গল্প, উপন্যাস, নাটক, কবিতা, প্রবন্ধ ও ধর্মবিষয়ক ৩৭টি বই বাংলা সাহিত্যের অমর সৃষ্টি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর