লক্ষ্মীপুরে ইজারা গ্রহীতা বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ডরপকে উচ্ছেদ করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) জমি দখলের লক্ষ্যে মামলা দায়ের করার অভিযোগ উঠেছে।
সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের আবদুল্লাহপুর গ্রামে সরকারি ৫১ শতাংশ জমি তহশিলদার শাহাদাত হোসেন নিজের বলে দাবি করছেন। এতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের কথা থাকলেও শাহাদাত বাদী হয়ে কর্মীসহ ডরপের কার্যালয় উচ্ছেদের জন্য মামলা করেছে।
রোববার (১৫ নভেম্বর) দুপুরে সরকারি জমি দখলের পাঁয়তারার বিরুদ্ধে ডরপের প্রোগ্রাম ম্যানেজার আবদুল মালেক সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন। অভিযুক্ত শাহাদাত ভবানীগঞ্জের আবদুল্লাহপুর গ্রামের মৃত মনসুর আহম্মদের ছেলে ও রায়পুর পৌরসভায় তহশিলদার হিসেবে কর্মরত।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ১৯৫৪ সাল থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত লক্ষ্মীপুর-রামগতি সড়কের পাশে আবদুল্লাহপুর মৌজার ৬২৯ দাগে ৫১ শতাংশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) অফিস ছিল। জমিটি ওইসময় পাউবোর নামে অধিগ্রহণ করা হয়। এতে ওই এলাকাটি স্থানীয়দের কাছে ওয়াপদা অফিস হিসেবেই পরিচিত। ১৯৫৪ সালে ভবানীগঞ্জ থেকে তোরাবগঞ্জ পর্যন্ত বেঁড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়। ওইসময় পাউবো আবদুল্লাহপুর এলাকা তাদের অফিস হিসেবে ব্যবহার করেন। ১৯৭০ সালে অফিসটির কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে ওই অফিসটি পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে। ১৯৯৪ সালে ডরপ ওই পরিত্যক্ত অফিসসহ পুরো জমিটি পাউবোর কাছ থেকে ইজারা নেয়। কিন্তু তহশিলদার শাহাদাত জমিটি নিজের দাবি করে ২০১৯ সালে লক্ষ্মীপুর আদালতে কর্মীসহ ডরপের কার্যালয় উচ্ছেদ করতে একটি মামলা দায়ের করেন। সম্প্রতি ওই মামলার নোটিশ আসলে এনিয়ে সংশ্লিষ্টরা বিপাকে পড়েন।
ভবানীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য (মেম্বার) মো. খোকন জানান, ২৬ বছর আগে ডরপ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছ থেকে ওয়াপদা অফিসটি ইজারা নিয়েছিল। কিন্ত এখন শুনতেছি, জমিটি নাকি পানি উন্নয়ন বোর্ডের নয়। ঘটনাটি রহস্যজনক।
স্থানীয় বাসিন্দা মুরশিদা বেগম অভিযোগ করে বলেন, মামলার বাদী শাহাদাত হোসেন ভূমি অফিসে চাকরি করেন। তিনি জমির ত্রুটি সম্পর্কেও অভিজ্ঞ। সেই সুযোগে তিনি সরকারি জমিটি দখলে নেওয়ার চেষ্টা করছেন।
বাদী শাহাদাত হোসেন বলেন, একই দাগে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৫১ শতাংশ জমি ও আমার ২৭ শতাংশ জমি রয়েছে। পাউবোর জমি খালি পড়ে আছে। কিন্তু ডরপ আমার জমি অবৈধভাবে দখল করে আছে। এজন্য আমি ডরপের কার্যালয় উচ্ছেদের মামলা করেছি।
ডরপের প্রোগ্রাম ম্যানেজার আবদুল মালেক জানান, ইজারা নেওয়ার পর থেকে ওই জমিতে একাধিক অবকাঠামো নির্মাণ করে ২৬ বছর ধরে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। কিন্তু তহশিলদার শাহাদাত পানি উন্নয়নের বিরুদ্ধে মামলা না করে ডরপের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। সরকারি জমি দখলের পাঁয়তারায় এ মামলা করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ফারুক আহম্মেদ বলেন, মামলার বিষয়টি জেনেছি। তবে জমির মালিকানা ও ইজারার মূল বিষয়টি বিষদভাবে এখন আমার জানা নেই।