পান চাষে স্বাবলম্বী হাশেম আলী খান

, জাতীয়

এস এম জামাল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া | 2023-08-25 21:02:43

নিজের আড়াই বিঘা জমিতে পান চাষ করে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার হাজরাহাটি গ্রামের যুবক হাশেম আলী খান।

বর্তমানে হাশেম পান চাষ করে এলাকার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তার পানের বরজে কাজ করে সংসার চালাচ্ছেন এলাকার আরও ৫-৭ জন শ্রমিক। তার মতো এলাকার অনেক কৃষকই পান চাষে করছেন।

প্রথমে ভাগ্য বদলাতে নিজ উদ্যোগে বাড়ির পাশের সামান্য জমিতে পানের বরজ গড়ে তোলেন তিনি। এতে ভালো সাফল্য আসায় দুই বছরের মাথায় আড়াই বিঘা জমিতে পানের আবাদ সম্প্রসারণ করেন হাশেম আলী। সারাবছর সংসারের খরচ মিটিয়ে বছর শেষে কয়েক লাখ টাকারও বেশি সঞ্চয় করছেন তিনি।

তিনি জানান, প্রতি বিঘায় দেড়শ পিলি পানের আবাদ করা হয়। এক বছর ধরে পানের বরজে পরিচর্যার পর পান উত্তোলন করা হয়। প্রতি পোন (৮০ বিড়ায়) পানের দাম একশো থেকে দুশো টাকায় বিক্রি হয়ে থাকে।

তিনি বলেন, আমার এক বিঘা জমিতে প্রায় এক থেকে দেড় লাখ টাকা লাভ হয়েছিল। প্রথমবার পানের বরজ করতে একটু বেশি খরচ হয়। কিন্তু পরের বার চাষ করতে খরচ কম। এবছর আমি আড়াই বিঘা জমিতে পানের চাষ করেছি। প্রায় দুই লাখ টাকার ওপরে পান বিক্রি করেছি। এখনো ২-৩ লাখ টাকার বিক্রি হবে।

বর্তমানে হাশেম পান চাষ করে এলাকার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন

পানচাষি হাশেম আলী খান জানান, একদিন অন্যের মুখাপেক্ষী ছিলাম। কিন্তু এখন আর অন্যের জমিতে কাজ করতে হয় না। এখন আমার পানের বরজে কাজ করে সংসার চালিয়ে বেশ কয়েকজন কৃষি শ্রমিক বেশ সুখে আছে। আমার পান চাষ দেখে লাভের আশায় অনেকেই পান চাষে এগিয়ে আসছেন।

এ ব্যাপারে মিরপুর উপজেলা কৃষি অফিসার রমেশ চন্দ্র ঘোষ জানান, এলাকায় পান চাষ সম্প্রসারণে কৃষকদের প্রশিক্ষণসহ সব ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মিরপুরসহ কুষ্টিয়া অঞ্চলের মাটি পান চাষের জন্য খুবই উপযোগী। তাই আরো অধিক পরিমাণ জমিতে পান চাষ করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব বলে তিনি মনে করেন।

কুষ্টিয়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য মতে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে কুষ্টিয়ার ছয়টি উপজেলায় ২ হাজার ৪ হেক্টর জমিতে পান চাষ করা হয়েছিল।

কুষ্টিয়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শ্যামল কুমার বিশ্বাস বলেন, কুষ্টিয়ার মাটি পান চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় এবং পানের বাজার দর ভালো থাকায় পান চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন কৃষকরা। অন্যান্য ফসলের তুলনায় পানে লাভও বেশি হয়। বাজারের চাহিদার কথা চিন্তা করে, মাটি ও মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষার দিকে নজর দিয়ে নিরাপদ পান উৎপাদনে কৃষি অফিস সহায়তা করছে কৃষকদের।

এ সম্পর্কিত আরও খবর