ফিরোজার ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প

, জাতীয়

এসএম জামাল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম | 2023-08-31 21:01:44

ফিরোজা আক্তার সম্পা। ২০১৯ সালে স্বামী মারা যাওয়ার পর দু’চোখে যেন অন্ধকার দেখছিলেন৷ দুই ছেলেমেয়ে নিয়ে পড়লেন অথৈ সাগরে। তবে সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে সেলাই প্রশিক্ষণ নিয়ে জীবনের অন্ধকার সময়ে পার করেছেন এই নারী।

শুধু তাই নয়, সেখান থেকে বিনামূল্যে পাওয়া সেলাই মেশিন দিয়ে তার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছেন। এরপর আর তাকে পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। এখন ব্যবসা করে সংসার চালাচ্ছেন। পাশাপাশি ছেলেমেয়েকে লেখাপড়া শেখাচ্ছেন। বলছিলাম কুষ্টিয়া শহরের ফিরোজা আক্তার সম্পার কথা।

শহরের আমলাপাড়ায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। তার স্বামী ঢাকায় ছোট একটা চাকরি করতেন। কিন্তু ২০১৭ সালের স্বামী মারা যাওয়ার পর তিনি দু চোখে  অন্ধকার দেখছিলেন৷ নিজের কোন মাথা গোঁজার ঠাঁই না থাকায় ভাড়া বাসায় এবং সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছিলো। এমন সময় আলোর পথ দেখাতে সহায়তা করে সমাজসেবা অধিদপ্তর।

বর্তমানে তিনি সংসারে স্বচ্ছলতা এনেছেন এবং তার এক ছেলে কুষ্টিয়া সেন্ট্রাল কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পাশ করেছে। আর ছোট মেয়ে কেজি স্কুলে লেখাপড়া করছে।

ফিরোজা আক্তার সম্পা

ফিরোজা আক্তার সম্পা বলেন, শহরের আমলাপাড়ায় ভাড়া বাসায় বসবাস করার সুবাদে সেখানেই কুষ্টিয়া শহর সমাজসেবা অধিদপ্তরের দক্ষতা উন্নয়ন ও সেলাই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে তিনমাসের হাতেকলমে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করি। এবং সেখানে থেকে আমাকে একটি সেলাই মেশিন বিনামূল্যে সহায়তা হিসেবে প্রদান করা হয়। তারপর আমি বাড়িতেই সেলাইয়ের কাজ করতোম। পরবর্তীতে কুষ্টিয়া শহরের এনএস রোড মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের নিচে ছোট্ট একটি রুম ভাড়া নিয়ে ডান্স লেডিস টেইলার্স নামের একটি দোকান পরিচালনা করছেন তিনি। মাঝে মাঝে একাই কাজ করেন। তবে কাজের চাপ বাড়লে মাঝে মাঝে দুই-তিনজন সহকারি কারিগর নিয়োগ দেন। এতে করে মাসে অন্তত ১০-১৫ হাজার টাকা আয় হয়। 

কুষ্টিয়া শহর সমাজসেবা অফিসার আসাফউদ্দৌলা বলেন, ফিরোজা আক্তার সম্পা এখান থেকে প্রশিক্ষণ লাভ করেই তার সংসারে স্বচ্ছলতা এনেছেন। তিনি নিজেও এখন উৎসাহ পাচ্ছেন। আমরা সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে নানা পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করছি। আগামীতে তার ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য বিনাসুদে ঋণ প্রদান করা হবে।

জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক রোখসানা পারভীন বলেন, মানুষ কোনো কাজকে অবহেলা আর অবজ্ঞা না করে কঠোর পরিশ্রম করলে তিনি কখনো ‘না খেয়ে মরেন না’। দরিদ্রতাকে জয় করে তিনি এখান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে আরও কয়েকজন মানুষের কর্মসংস্থানও সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর