বরগুনায় ধর্ষণে কিশোরী অন্তঃসত্তা, গ্রেফতার ২
দেশের দক্ষিণের জেলা বরগুনা সদর থানার পিটিআই সড়ক এলাকায় বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও ভিক্ষুক বাবা মায়ের এক মাত্র মেয়েকে সঙ্গবদ্ধ ধর্ষণ ও অন্তঃসত্তার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পলাতক দুই আসামিকে রাজধানীর ডেমরা থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
বুধবার (০৮ মে) বিকেলে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন র্যাব-১০ এর সহকারী মিডিয়া কর্মকর্তা সহকারী পুলিশ সুপার এম. জে. সোহেল।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- মো. খলিল (৩৮) ও মো. বশির হোসেন (৩৫)। মঙ্গলবার (০৭ মে) রাতে ও বুধবার দুপুরে ধারাবাহিক অভিযানে তাদের গ্রেফতার কার হয়।
র্যাব বলছে, অভিযুক্তরা ভুক্তভোগী কিশোরীর প্রতিবেশী হওয়ায় বিভিন্ন অজুহাতে বাড়িতে ডেকে নিয়ে জোর করে ধর্ষণ করে তারা। এমন কি অভিযুক্তরা কিশোরীকে সঙ্গবদ্ধ ধর্ষণ করে প্রকাশ না করতে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখায়। তবে ভুক্তভোগী কিশোরী অন্তঃসত্তা হয়ে পড়াতে বিষয়টি প্রকাশ পায়। পরবর্তীতে ভুক্তভোগী পরিবার মামলা করে।
মামলার বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার সোহেল বলেন, বরগুনা জেলার সদর থানা এলাকার এক বুদ্ধি প্রতিবন্ধী দম্পতি। তারা আশপাশের এলাকায় ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবিকা নির্বাহ করত। তাদের সংসারে ১৫ বছরের মেয়ে রয়েছে। ওই দম্পতি বুদ্ধি প্রতিবন্ধী মেয়েকে বাসায় রেখে ভিক্ষা করতে যেতেন। এই সুযোগে গত ১০ ফেব্রুয়ারি ভুক্তভোগীর প্রতিবেশী খলিল তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায়। বাড়িতে নিয়ে ভয়-ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক দুই বার ধর্ষণ করে। ঘটনাটি কাউকে বললে মেরে ফেলার হুমকি দেন খলিল। ফলে বিষয়টি ভয়ে প্রকাশ করেনি ভুক্তভোগী কিশোরী। পরবর্তীতে অপর এক প্রতিবেশী দুলাল একইভাবে তার বাড়িতে ভুক্তভোগীকে ডেকে নেন। ভুক্তভোগী দুলালের বাড়িতে গিয়ে দেখতে পায় বশির ও কামাল অবস্থান করছে। তাদেরকে দেখে ডাক-চিৎকার করার চেষ্টা করলে দুলাল, বশির ও কামাল ভুক্তভোগীর মুখ চেপে ধরে পালাক্রমে গণধর্ষণ করে।
এএসপি সোহেল আরও জানান, এই ঘটনার পরবর্তীতে ভুক্তভোগীর শারীরিক পরিবর্তন হলে পরিবারের লোকজন মা ও শিশু ক্লিনিকে নিয়ে যায়। দায়িত্বরত চিকিৎসক বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ভুক্তভোগী কিশোরী অন্তঃসত্তা বলে জানায়। পরবর্তীতে পরিবারের লোকজন ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে সে পরিবারকে ধর্ষণের ঘটনার বিস্তারিত জানায়। এই ঘটনায় খলিল, দুলাল, বশির, কামাল ও ধর্ষণে সহযোগিতা করায় খলিলের স্ত্রী আকলিমাসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৪ থেকে ৫ জনের বিরুদ্ধে গণধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।
র্যাব কর্মকর্তা বলেন, গণধর্ষণের ঘটনাটি জানতে পেরে র্যাব-১০ ও র্যাব-৮ এর একটি যৌথ দল ১৫ বছরের কিশোরীকে গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার ও বুধবার র্যাব-১০ ও র্যাব-৮ গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর ডেমরা থানার মোস্ত মাঝির মোড় ও ডেমরাঘাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামিরা গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। তাদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।