ঘাসের ডগায় সকালের সোনালী রোদের ছোঁয়ায় মুক্তার মতো জ্বলা শিশির কণার উপস্থিতিই জানান দেয় শীতের আগমনী বার্তা। এবার একটু আগেভাগেই জেঁকে বসেছে শীত। শীতের আগমনে প্রস্তুতি নিতে ব্যস্ত নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। ব্যবসায়ী ও মৌসুমি ব্যবসায়ীরা শীতের কাপড় ক্রয়-বিক্রয়ে কাটাচ্ছেন ব্যস্ত সময়।
শীতকালকে বরণ করে নিতে নানা প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে সাভার ও আশুলিয়াবাসী। শিল্পাঞ্চল সাভার ও আশুলিয়ায় পোশাক শ্রমিকদের আনাগোনাই বেশি। এরা সাধারণত আর্থিকভাবে সচ্ছল না হওয়ায় কেনাকাটা করতে ভিড় জমায় এ অঞ্চলের বিভিন্ন ফুটপাতে। এদের চাহিদার ওপর বিশেষ নজর রেখেই ফুটপাত ব্যবসায়ীরা শীতের কাপড়ের পসরা সাজিয়ে বসেছেন তাদের দোকানে। ক্রেতারাও জমাচ্ছেন ভিড়।
শনিবার (২৮ নভেম্বর) বিকেলে সাভার স্ট্যান্ড, নবীনগর, বাইপাইল, বলিভদ্রবাজার ও জামগড়া এলাকার ফুটপাত ঘুরে দেখা যায়, নানান ধরনের আকর্ষণীয় শীতের কাপড়ের সমাহারে দোকান সাজিয়েছেন ফুটপাত ব্যবসায়ীরা। একটু আগেভাগেই শীতের আগমনে অপ্রস্তুত মানুষেরা নিতে শুরু করেছেন প্রস্তুতি। পছন্দ ও চাহিদা অনুযায়ী কিনছেন শীতের কাপড়।
জামগড়া এলাকার ফুটপাত ব্যবসায়ী আল-আমীন বার্তা২৪.কম-কে বলেন, এবার আগেভাগেই শীত পড়েছে। ধীরে ধীরে শীতের প্রকোপ বাড়তে থাকায় ভিড় জমাতে শুরু করেছেন ক্রেতারা। এখন বেশির ভাগ শিশুদের কাপড় কিনছেন ক্রেতারা। এই অঞ্চল শ্রমিক অধ্যুষিত হওয়ায় তাদের চাহিদা অনুযায়ী কাপড় সরবরাহ করার চেষ্টা করছি। অল্প দামে শ্রমিকদের সামর্থের মধ্যে মানসম্মত পণ্য ক্রয় করছে ক্রেতারা।
বলিভদ্রবাজার ফুটপাতের ব্যবসায়ী সাইদ বার্তা২৪.কম-কে বলেন, শীত এখনও পুরোপুরি নামেনি। এ কারণে ক্রেতাদের তুলনামূলক ভিড় কম। আর এখানকার সবাই শ্রমিক। তাদের বেতন হয় মাসের ৮ কিংবা ১০ তারিখে। এখন মাসের শেষ ক্রেতাদের হাতে টাকাপয়সা নাই। বেতন হলেই পুরোদমে আমাদের ব্যবসা জমবে। তারপরেও ক্রেতার সংখ্যা কম নয়। প্রতিদিনই ক্রেতাদের ভিড় বাড়ছে।
ফুটপাতে কাপড় কিনতে এসেছেন হাসান দম্পতি। তাদের সঙ্গে কথা হলে বার্তা২৪.কম-কে এই দম্পতি বলেন, আসলে শীত এবার একটু আগেই শুরু হয়েছে। হঠাৎ শীতের আগমনে অপ্রস্তুত থাকলেও এখন প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছি। যদিও এখনও বেতন হয় নাই, তবে সন্তানদের কষ্টের কথা চিন্তা করে টাকা ধার করে নিয়েই মার্কেটে আসলাম।
অপর ক্রেতা খোরশেদ আলম বার্তা২৪.কম-কে জানান, আমরা নিম্ন আয়ের মানুষ। শীত শুরু হয়েছে মোটামুটি অপ্রস্তুত সময়ে। আজ শুধু ছেলেমেয়েদের জন্য অল্প করে প্রয়োজনমতো কেনাকাটা করবো। বেতন হলে আবার মার্কেটে আসতে হবে। আমরা চাহিদা মতো মানসম্পন্ন কাপড় পাচ্ছি এখানকার ফুটপাতের ব্যবসায়ীর কাছে, তবে দাম গত শীতের চেয়ে একটু বেশি।
এছাড়া আশুলিয়ার পাইকারি বাজারেও ক্রেতাদের ভিড় লক্ষণীয়। পাইকারি বাজারে পাইকারদের পাশাপাশি খুচরা ক্রেতাদের ভিড় দেখা যায়। বর্তমানে শীতের কাপড়ের মধ্যে শিশুদের পোশাকের টান বেশি। বাইপাইলের করিম সুপার মার্কেটের পাইকারি ব্যবসায়ী লতিফ বলেন, বর্তমানে বিক্রি কিছুটা কম হলেও ৭ থেকে ৮ তারিখের মধ্যে জমে উঠবে বিক্রি। এখন মাসের শেষ কারও হাতে টাকা নাই, ধারণা করা হচ্ছে বেতন হাতে পেলে মার্কেটে ভিড় আরও বাড়বে।