রংপুর সিটি করপোরেশনে (রসিক) দরপত্রের নামে ৫ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনায় দুদকের করা মামলায় মূল অভিযুক্তদের বাদ দিয়ে একজন ক্যামেরাম্যান কাম জনসংযোগ সহকারীকে আসামি করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় মামলা পুনঃতদন্তের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন রসিকের সাবেক ক্যামেরাম্যান কাম জনসংযোগ সহকারী গোলজার রহমান আদর।
বুধবার (২০ জানুয়ারি) গোলজার রহমান আদরের আবেদন সূত্রে জানা যায়, রংপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র প্রয়াত সরফুদ্দিন আহাম্মেদ ঝন্টুর সময়ে তার দায়িত্ব ছিল মেয়রের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের ছবি তুলে সংরক্ষণ ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের খবর স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশ করা। একই সময়ে তাকে ‘তথ্য কর্মকর্তা’ হিসেবেও দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু মেয়র, নির্বাহী প্রকৌশলী ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী তাকে দিয়ে মাঝে মধ্যে পিয়নের মতো কাজ করিয়ে নিতেন। পত্রিকায় দরপত্র বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের জন্য দিয়ে বিজ্ঞপ্তির ফটোকপিটিতে স্বাক্ষরসহ ‘বুঝিয়া পাইলাম’ লিখে নিতেন। এবং পরে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিসহ পত্রিকার কপি বুঝে নিতেন।
কিন্তু কিছু টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি পত্রিকায় প্রকাশ না হওয়ার জন্য তার বিরুদ্ধে সরকারি কাজে নিয়োজিত থেকে দায়িত্বে অবহেলা, প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়। যেসব দরপত্র বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ না করার অভিযোগ করা হয়েছে সেগুলোর বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। এছাড়া এসব তার দায়িত্বের মধ্যেও পড়ে না। ঠিকাদারি কাজের বিল দেওয়া থেকে শুরু করে বিল উত্তোলন পর্যন্ত পুরো কাজটি সম্পন্ন করে প্রকৌশল বিভাগ।
এসব বিষয়ে তার কোন সংশ্লিষ্টতা না থাকলেও শুধুমাত্র তাকেই আসামি করেছে দুদক। মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারি) মামলা পুনঃতদন্তসহ প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবিতে দুদক চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করেছেন তিনি।
গোলজার রহমান আদর বলেন, প্রকৃত অভিযুক্তরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বাদ দিয়ে আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। আমি সাক্ষী ছিলাম অথচ আমাকে আসামি করা হয়েছে।
রংপুর জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক বীরমুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেন বলেন, মামলাটির তদন্ত ত্রুটিপূর্ণ হয়েছে। তাই মামলাটি পুনঃতদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধী চিহ্নিত করা সম্ভব। এর আগে আলোচিত ওই মামলার বিষয়ে জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির পক্ষ থেকে কমিশন বরাবর একটি অভিযোগ করা হয়েছিল।