বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা করেন বলে জানালেন আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য (সিরাজগঞ্জ-৩) হাবিবে মিল্লাত।
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান সোয়াত জাহাজ থেকে অস্ত্র নামাতে গিয়েছিল ২৫ আগস্ট রাতে। নেহায়াত বাংলাদেশের কিছু সামরিক এবং বেসামরিক কর্মকর্তা তাদের ফিরিয়ে এনেছিল পরবর্তীতে নিজে ২৭ মার্চ কালুরঘাট থেকে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের চাপে।
সোমবার (২৫ জানুয়ারি) দুপুরে ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়ার সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনিত ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি একথা বলেন।
হাবিবে মিল্লাত বলেন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ, এরশাদ বিরোধী স্বৈরাচারী আন্দোলন ও খালেদা বিরোধী আন্দোলন প্রত্যেকটি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব দিয়েছে।
বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানার বক্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি? স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি তো আপনারা। সেই জিয়াউর রহমান, যে আপনার দলের প্রতিষ্ঠাতা সেই সোয়াত জাহাজ থেকে অস্ত্র নামাতে গিয়েছিল ২৫ আগস্ট রাতে। নেহায়াত বাংলাদেশের কিছু সামরিক এবং বেসামরিক কর্মকর্তা তাকে ফিরিয়ে এনেছিল। পরবর্তীতে নিজে ২৭ মার্চ কালুরঘাট থেকে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা করেন। ওই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের চাপে। নিজেকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য।
বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্যের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ এর কতগুলো ডাটা দেন এবং বিভিন্ন সংগঠনের কথা বলেন। এইসব ভুঁইফোড় সংগঠন যেমন বাংলাদেশে আছে। এইসব ভুঁইফোড় সংগঠন সারা পৃথিবীতেই আছে। এদের ফান্ড করলে তারা যে কোন রিপোর্ট আপনাকে তৈরি করে দেবে।
তিনি বলেন, করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশ সক্ষম ২০টি দেশের মধ্যে একটি। করোনা পরিস্থতি বাংলাদেশের আগের চেয়ে অনেক ভালো। আমরা সক্ষমতার দিক দিয়ে ২০ দেশের মধ্যে চলে গেছি। গত কয়েক দিনের ট্রেড হচ্ছে ৫ শতাংশের নিচে আছে করোনা সংক্রমণ। এটা ধরে রাখতে পারলে দুই সপ্তাহ পরে কিন্তু মহামারি আমাদের দেশ থেকে বিদায় নেবে, বৈজ্ঞানিকভাবে তাই হওয়া সম্ভব।
বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্যদের সমালোচনা করে হাবিবে মিল্লাত বলেন, নির্বাচন নিয়ে কথা বলেন, সুযোগ পেলেই বিভিন্ন নির্বাচন নিয়ে আপনাদের কথা বলতে হয়। নির্বাচন করেন না কিন্তু সংসদে ঠিকই এসে বসেন। নির্বাচন করেন না সংসদে নির্বাচনের বিরুদ্ধে কথা বলেন। এতোই যদি নির্বাচন খারাপ হয়ে থাকে এতই যদি নির্বাচন পছন্দ না হয় এমপি হিসেবে কেন সুযোগ সুবিধাগুলো আপনারা নিচ্ছেন? সেটা বলবেন না। কেন ১০ কাঠা জমির জন্য আবেদন করেছিলেন? পত্রিকায় প্রকাশ হবার পর সেটা প্রত্যাহার করেছেন। কোথা থেকে টাকা আসে আমরা জানি না। আমরা বুঝতে পারি না। গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চান? জিয়াউর রহমানের হ্যাঁ না ভোটের নির্বাচন? ১১০ ভাগ হ্যাঁ ভোট না ভোট একটিও পড়েনি। ওই নির্বাচন আপনারা চান তো ওই নির্বাচন বাংলাদেশের জনগণ হতে দেবে না। হতে পারে না এই বাংলাদেশে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ এগিয়ে রয়েছে। ওই দুই চারজন কুচক্রির জন্য এই অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে রাখা যাবে না। বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হবে। আপনারা গুম খুন হত্যার কথা বলেন জিয়াউর রহমান কত হাজার মুক্তিযোদ্ধাকে খুন করেছে হত্যা করেছে? আমাদের দেশের প্রেমিক সেনাবহিনীর কত অফিসারকে কোর্ট মার্শাল দিয়ে রাতের অন্ধকারে। অপারেশন ক্লিন হার্ট করে কত মানুষকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীকে হত্যা করেছেন নির্যাতন করেছেন স্মরণ নেই? জনগণের কাছে ক্ষমা চান, মাফ চান। নির্বাচনে অংশ গ্রহণ না করা যে কোন দলের গণতান্ত্রিক অধিকার, কিন্তু প্রতিহত করার অধিকার কারো নেই। নির্বাচন প্রতিহত করার জন্য শত শত মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছেন।
হাবিবে মিল্লাত বলেন, খুনি তারেক জিয়া কিভাবে দেশের বাইরে রাজকীয়ভাবে থাকে? যে জুয়া খেলে দিন কাটায় বলে তার ট্যাক্সের ফাইলে দিয়েছে।
তিনি বলেন, সড়ক আন্দোলন কিংবা হেফাজতের আন্দোনের ওপর ভর করে তারা ভাবছিল ক্ষমতায় যাবে। তাদের তো বেশি কাজ কর্ম নাই তারা দিবাস্বপ্ন দেখে, দিবা স্বপ্ন কখনো সঠিক হয় না। সারাদিন টিভি টক শো আর সাংবাদিক সম্মেলন করে বাংলাদেশের মানুষের মন ভোলানো যাবে না।
তিনি বলেন, ইচ্ছে করলেই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে কোথাও থেকে এত সহজে সরানো যাবে না। আপনাদের ছোট খাটো দুই একটা হুমকি ওসব সময় দিয়ে থাকেন। আমরা দেখেছি সেই বাঘের গর্জন এখন বিড়ালের মিউ মিউ তে রূপান্তর হয়েছে। আপনার নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। আপনারা দুর্নীতির কথা বলেন। আপনাদের উচিত, আপনারা যদি সত্যিকার অর্থে মন থেকে বলে থাকেন তাহলে আপনার নেত্রীকে বহিষ্কার করা। আদালতে প্রমাণিত হয়েছে এতিমের টাকা চুরি করার জন্য ১০ বছরের জেল হয়েছে। মুচলেকা দিয়ে বাড়িতে বসে আছেন। কোন কাজ কর্ম করতে পারেন না। আরেক নেতা তারেক জিয়া তার জন্য আপনারা দলীয় গঠণতন্ত্র পরিবর্তন করেছেন ৭ ধারা উঠিয়ে দিয়েছেন।
নিজ দলের কিছু ত্রুটি তুলে ধরে বলেন, আসলে আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ক্ষমতায় আছে, অনেকের মধ্যেই কিছুটা দ্বন্দ্ব সংঘাত শুরু হয়েছে। আশা করব দলীয় ফোরামে আলোচনা করে জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে সমাধান করা হবে।