দেশে সাড়ে ১৬ কোটি মানুষ, প্রতি বছর ২২ লাখ নতুন মুখ যোগ হচ্ছে। এতে দেশে চালের চাহিদা ও কনজামশন বেড়েছে। ১০ লক্ষাধিক রোহিঙ্গাদের খাবার জোগান দিতে হচ্ছে। বোরো চাষ লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করায় কোনো খাদ্য ঝুঁকি নেই বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক এমপি।
বৃহম্পতিবার (১ এপ্রিল) মন্ত্রণালয় থেকে অনলাইনে সুনামগঞ্জের দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার জয়কলস ইউনিয়নের আস্তনা গ্রামে বোরো ধান কর্তন কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, চলতি বছর সারা দেশের বোরো ধান সফলভাবে ঘরে তুলতে পারলে করোনাকালেও দেশে খাদ্য নিয়ে ঝুঁকি থাকবে না। মহামারি করোনাকালে খাদ্য নিয়ে মানুষকে যাতে আতঙ্কে থাকতে না হয়, খাদ্যের যাতে কোনো অভাব না হয়, আমরা সেটি নিশ্চিত করতে দৃঢ়ভাবে কাজ করছি। বোরো মৌসুমে দেশে সবচেয়ে বেশি ধান চাল উৎপাদন হয়। সেজন্য হাওরসহ সারা দেশের ধান কাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে আজ ধান কর্তন উদ্বোধন করেছি যাতে মানুষের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি পায়। হাওরসহ সারা দেশের বোরো ধান সফলভাবে ঘরে তুলতে পারলে দেশে খাদ্য নিয়ে তেমন কোন ঝুঁকি থাকবে না। আমরা স্বস্তিতে থাকতে পারবো। সেজন্য, সফলভাবে বোরো ধান কর্তনের জন্য সম্মিলিতভাবে সারা জাতিকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান মন্ত্রী।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, এ বছর প্রায় ৪৮ লাখ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এই লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে সারাদেশে ৪৮ লাখ ৮৩ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। ফলে, লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৮৩ হাজার হেক্টর বেশি জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। উৎপাদনশীলতা বেশি হওয়ায় হাইব্রিড জাতের ধানের চাষ বৃদ্ধিতে এবছর জোর দেওয়া হয়েছিল। সেজন্য, গত বছরের তুলনায় প্রায় ৩ লাখ হেক্টর জমিতে হাইব্রিডের আবাদ বেড়েছে। গড়ে হেক্টর প্রতি ১ টন করে বেশি ফলন হলেও কমপক্ষে ৩ লাখ টন উৎপাদন বাড়বে। এ বছর বোরোতে ২ কোটি ৫ লাখ টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।
মন্ত্রী বলেন, ডব্লিউএফপি বাংলাদেশ থেকে খাদ্য কিনেই রোহিঙ্গাদের দেয়, বাইরে থেকে আনা হয় না। গত মৌসুমে বন্যার কারণে ধান চালের দাম কিছুটা বেশি ছিল। সেজন্য বছরের শুরুতেই আমরা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলাম যে কোন মূল্যে উৎপাদন বাড়াতে হবে। বোরো ধানের আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য আমরা এ বছর বেশি করে কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বীজসহ বিভিন্ন কৃষি উপকরণ প্রণোদনা দিয়েছি। শুধু হাইব্রিড জাতের ধানের চাষ বৃদ্ধিতে দেওয়া হয়েছে প্রায় ৭৩ কোটি টাকার প্রণোদনা। এতে করে কৃষকেরা উৎসাহিত হয়েছে।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মেসবাহুল ইসলাম, মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক উপস্থিত ছিলেন। ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানটিতে সভাপতিত্ব করেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো: জাহাঙ্গীর হোসেন।