লক্ষ্মীপুরের অর্থকরী ফসলের মধ্যে সুপারি অন্যতম। বেশ লাভজনকও। এখন সুপারির মৌসুম। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা রাস্তার মোড়ে মোড়ে সুপারি কিনতে বসছে প্রায় প্রতিদিনই। এতে রাস্তার মোড়গুলো সুপারির হাটে পরিণত হয়। এ কারণে জেলার বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে তাদেরকে দেখা যায়। এরকমই রাস্তার পাশে চটি পেতে বসে থাকে স্বল্প পুঁজির সুপারি ব্যবসায়ীরা।
মূলত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাই রাস্তার মোড়গুলোতে বসে সুপারি কিনে। কারো কাছ থেকে ১০ গোন্ডা (এক গোন্ডায় ৪টা), আবার কারো কাছ থেকে এক পোন (৮০টি)। আবার কারো কারো কাছ থেকে এক কাউন (১৬ পোনে এক কাউন) হিসেবে সুপারি কিনে থাকে তারা। পরে তারা আড়তদারদের কমিশন হিসেবে সুপারিগুলো দেয়।
লক্ষ্মীপুর জেলা শহর থেকে ভবানীগঞ্জ বাজার যাওয়ার পথে দেখা হয় কয়েকজন ক্ষুদ্র সুপারি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা প্রতিদিনই এসব জায়গায় বসে সুপারি কিনে। অনেকে আবার আড়তদারদের সুপারি না দিয়ে বিভিন্ন চায়ের দোকানে বিক্রি করে। তারা এক পোন কাচা সুপারি ৫০ থেকে ৬০ টাকা এবং পাকা সুপারি ৮০-৯০ টাকা দরে কিনে। তবে সৌন্দর্য ও আকারের ওপরও সুপারির দাম নির্ধারণ হয়ে থাকে।
সুপারি উৎপাদনে উপকূলীয় এ জেলার মাটি ও আবহাওয়া বেশ উপযোগী। জেলার বিভিন্ন এলাকায় বিশাল বিশাল সুপারির বাগান রয়েছে। আগস্ট মাসের প্রথম থেকেই গাছে সুপারি পাকতে শুরু করে। এরপর থেকেই জেলার বিভিন্ন হাটে সুপারি বেচাকেনা হচ্ছে। আগামী বছরের মার্চ পর্যন্ত সুপারি সংগ্রহ চলবে।
অর্থকরী ফসল ও সৌন্দর্যের জন্য অনেক বাড়ির আশপাশে, প্রবেশ পথে, পুকুরপাড়ে, রাস্তার ধারে সারি সারি সুপারি গাছ রয়েছে। এছাড়া সুপারি উৎপাদনে খরচ কম। তেমন পরিচর্যাও লাগে না। অন্যান্য ফসলের চেয়ে অধিক লাভ। চাহিদা বেশি থাকায় প্রত্যাশিত দামও পাওয়ায় যায়। যে কারণে জেলার বিভিন্ন স্থানে সুপারি চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এবার জেলার প্রায় ৬ হাজার ২০০ হেক্টর জমির গাছ থেকে সুপারি সংগ্রহ করবে স্থানীয়রা। এখান থেকে হেক্টর প্রতি ১ থেকে ৭ মেট্রিক টন শুকনো সুপারি পাওয়া যাবে।
সদর উপজেলার আবিরনগর গ্রামের ক্ষুদ্র সুপারি ব্যবসায়ী ইব্রাহিম মিয়া জানান, পুঁজি কম থাকায় বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে সুপারি কিনতে হয়। প্রতিদিন প্রায় ২-৩ কাউন সুপারি কেনা হয়। পরে এসব সুপারি আড়তদারদের কাছে বিক্রি করা হয়। মাঝে মধ্যে বিভিন্ন চায়ের দোকানদারদের কাছেও বিক্রি করা হয়।