প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা অনুযায়ী পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা পাবে আধুনিক বাসযোগ্য আবাসন। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন গাবতলীয় এলাকায় পুরনো ডোবা ভরাট করে প্রায় ৪ একর জায়গার উপর নির্মাণ হচ্ছে ‘গাবতলী সিটি পল্লী’ নামে পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের আবাসস্থল।
মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম আগের মেয়াদে এসে এই প্রকল্পের কাজের উদ্বোধন করেন। প্রকল্পের সারসংক্ষেপ এ দেখা গেছে গাবতলী সিটি পল্লীর চুক্তিমূল্য ৪৯ কোটি ৪৮ লাখ ১৬ হাজার ৪৬১ দশমিক ৩১৯ টাকা। সংশোধিত মূল্য ৫৬ কোটি ৭৮ লাখ ৮৬ হাজার ৪০৫ দশমিক ৩৭৯ টাকা। জিওবি ফান্ড থেকে নির্মিত এই প্রকল্পের সমাপ্তির সময়সীমা ছিল ২০২১ সালের ৫ এপ্রিল।
বুধবার (২১ এপ্রিল) প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি সরেজমিনে দেখতে যান মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, বাস্তবত যে অবস্থা তাতে এই প্রকল্প শেষ করতে ২০২৩ সাল পর্যন্ত লেগে যাবে। প্রকল্পের ব্যয় সম্পর্কে মেয়র বলেন, এটি এখন সংশোধিত হয়ে দাঁড়াবে ২২১ কোটি টাকা। অর্থাৎ প্রায় ৪ গুণ ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে।
পরিদর্শকালে মেয়রের সঙ্গে ছিলেন, ডিএনসিসি’র প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহ: আমিরুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এম সাইদুর রহমান, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. শরীফ উদ্দীন, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব), সিভিল সার্কেল খন্দকার মাহাবুব আলম, প্রকল্প পরিচালক শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।
ব্যয় বৃদ্ধির কারণ ও প্রকল্পের সময় বৃদ্ধি সম্পর্কে মেয়র বলেন, “২০১৯ সালের ডিসেম্বর এই প্রকল্পের কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে। ২০২০ সাল থেকে কাজ ধরার কথা ছিল কিন্তু যখন কাজ ধরবে তখন থেকে করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়া সেটা সম্ভব হয়নি।”
ব্যয় বৃদ্ধির বিষয়ে বলেন, পাইলিং যখন শুরু হলো তখন দেখা গেছে ৯০ ফিট যাওয়ার পরে এখানে নিচের দিকে ‘ভ্যাকুয়াম’ সৃষ্টি হয়েছে। অর্থাৎ এখানে ৯০ ফিট যাওয়ার পরে আরো ডিপ এ যেতে হবে। পরিকল্পনায় ছিল ৮৫ ফিট। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে কোথাও ৯৩, কোথাও ৯৫ ফুট। তাই ডিজাইনের একটা সমস্যা ছিল। ভাগ্যে ভালো সমস্যাটি আগে দেখা গেছে, তা নাহলে ভবন করার পর বড় ধরণের দুর্ঘটনাও সৃষ্টি হতে পারত। পরে এটি রিভাইজ করে এমআইএসটিতে ভেটিং করা হয়। এই জায়গাটি ৫০-৬০ বছর আগে এখানে পুরো ডোবা ছিল। একটি ডোবাতে পাইলিং করা বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। সব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে প্রকল্প এখন দৃশ্যমান। আগে এটি দৃশ্যমান ছিল না এখন দৃশ্যমান। এখন স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে।
যেখানে থাকবে ৪টি ১৬ ইউনিটের ১৫ তলা ভবন এবং ১ টি ৮ ইউনিটের ১৫ তলা ভবন। প্রতিটি ফ্ল্যাটে একটি মাস্টার্ড বেড, দুটি ছোট বেড রুম, বারান্দা ও কমন স্পেস থাকবে। এসব ভবনে মোট ৭৮৪টি পরিবারের বাসস্থান করার পরিকল্পনা নিয়ে ২০১৯ সালের ২৬ অক্টোবর কার্যাদেশ দেয়া ডিএনসিসি। যদিও মেয়র বলেছেন ডিসেম্বরে কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের ছেলে মেয়েদের লেখাপড়ার জন্য একটি ৪ তলা স্কুল ভবন নির্মাণ করা হবে। পুরো প্রকল্প এলাকা কয়েকটি ভাগে ভাগ করে কাজ করা হচ্ছে। একটি ভবনের পাইলিং শেষে পিলার দাঁড়িয়ে গেছে। অন্যগুলো পাইলিং চলছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে মায়শা এন্টারপ্রাইজ ও জনি এন্টারপ্রাইজ এবং বঙ্গ বিল্ডার্স।