কারখানা খুলে দেওয়ার শর্তে অবরোধ প্রত্যাহার করল শ্রমিকরা
গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে কারখানা খুলে দেয়ার ঘোষণা পেয়ে সাড়ে ৩ ঘণ্টা পর ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক থেকে অবরোধ প্রত্যাহার করেছে পোশাক কারখানার শ্রমিকরা।
আগামী মঙ্গলবার সকাল থেকে যথারীতি কারখানা চালু হবার ঘোষণা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশের কোনাবাড়ী-কাশিমপুর জোনের সরকারি কমিশনার সুবীর কুমার সাহা এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, মঙ্গলবার কারখানা খুলে দেওয়ার শর্তে সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে শ্রমিকরা অবরোধ তুলে নিয়েছে। এখন ধীরে ধীরে মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হচ্ছে।
এর আগে সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের কোনাবাড়ী এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে এম এম নীটওয়্যার লিমিটেড ও মামুন নীটওয়্যার লিমিটেড কারখানার বন্ধ ঘোষণা করা দুইটি কারখানা খুলে দেওয়ার দাবি জানান।
পুলিশ ও কারখানা শ্রমিক ও এলাকাবাসী জানান, গত ১৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ১৩ (১) ধারা মোতাবেক এম এম নীটওয়্যার ও মামুন নীটওয়্যার লিমিটেড কারখানা দুটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। পরে রোববার (২২ ডিসেম্বর) সকালে কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে শ্রমিকরা কারখানার মূল ফটকে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। এক পর্যায়ে বিকেলে শ্রমিকদের সাথে কারখানা কর্তৃপক্ষ আলোচনায় বসবে শর্তে শ্রমিকরা বিক্ষোভ প্রত্যাহার করে নেয়। ওই সময় কারখানা কর্তৃপক্ষ তাদের শর্ত সাপেক্ষে কারখানায় যোগদানের কথা জানায়। কিন্তু শ্রমিকরা তা মেনে নেয়নি। পরে সোমবার সকালে কারখানা দুটি শ্রমিকরা পুনরায় কোনাবাড়ী এলাকায় কারখানার সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। একপর্যায়ে শ্রমিকরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। এতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এসময় শ্রমিকরা বিনা শর্তে কারখানা খুলে দেয়া ও শ্রমিকদের নামে মামলা প্রত্যাহার করার দাবি জানায়।
এর আগে ১৭ ডিসেম্বর শ্রমিকদের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার দাবিতে কাজ বন্ধ করে দেয় শ্রমিকরা। পরে কর্তৃপক্ষ ১৮ ডিসেম্বর থেকে অনির্ষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধ ঘোষণা করে।
গত ৩ নভেম্বর শিল্প পুলিশের এক সদস্যকে আঘাত করে শ্রমিকরা। পরে শিল্প পুলিশ বাদী হয়ে ৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৫০/৬০ জন শ্রমিককে আসামি করে মামলা দায়ের করে। ওই মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে ১৭ ডিসেম্বর শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করে দেয়। পরে কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়ে কারখানার নিরাপত্তার স্বার্থে অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটনের কোনাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম জানান, শ্রমিকরা কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। পরে মালিকপক্ষ নিঃশর্ত ভাবে দাবি মেনে নিলে দুপুরে মহাসড়ক ছেড়ে দেয়। আগামীকাল থেকে তারা কাজে যোগ দিবে।