তীব্র তাপদাহ ও দীর্ঘ দিন বৃষ্টি না হওয়ায় কুষ্টিয়ার খোকসায় লিচুর ফলনে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন লিচু চাষি ও বাগান মালিকরা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, ২০২০-২০২১ অর্থবছরে উপজেলায় লিচু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪০ হেক্টর। এ বছর কৃষকরা ১০৩ হেক্টর জমিতে লিচু আবাদ করেছেন যা লক্ষ্যমাত্রার দ্বিগুণ।
কুষ্টিয়ার বিভিন্ন এলাকার বাগানে গিয়ে দেখা যায়, বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত চাষিরা। তারা জানান, আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় এবার লিচুর ফলন ভালো হয়নি। ফলে তাদের লোকসান গুনতে হবে।
গোপগ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেনের ছেলে তৌহিদুর রহমান রাজু বলেন, ২০ বিঘা জমির ওপর লিচু বাগান করেছি। প্রায় ৫০০টি গাছের মধ্যে এবার মাত্র ১৫ থেকে ১৬টি গাছে লিচু এসেছে। গত বছর প্রায় লক্ষাধিক টাকার লিচু বিক্রি করেছিলাম। কিন্তু এবার ফলন খুবই খারাপ হয়েছে। এবার হাজার বিশেক (বিশ হাজারের মত) টাকা লিচু বিক্রি হবে কি না এই নিয়ে চিন্তিত।
লিচু ভালো না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে এই বাগান মালিক বলেন, যখন লিচু গাছে মুকুল আসে তখন প্রচণ্ড তাপদাহ ও সময় মতো বৃষ্টি না থাকায় মুকুল ঝরে পড়েছে। তখন গাছে দিন-রাত পানি দিয়েও কোনো লাভ হয়নি। এ জন্য এবার লিচুর ফলন ভালো হয়নি।
মিরপুর উপজেলার হাজরাহাটী গ্রামের শাহীন আলী বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে এ বছর লিচুর মুকুল তুলনামূলক কম। তাছাড়া তীব্র তাপদাহের কারণে লিচু ফেটে যাচ্ছে এতে করে লোকসান গুনতে হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সবুজ কুমার সাহা বলেন, লিচুর ফলন কম হওয়ায় লিচু চাষের সঙ্গে জড়িত বাগান মালিকরা চরম আর্থিক দুরবস্থার মধ্যে পড়বেন।
তিনি আরও বলেন, এখনও প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাকি আছে। কী হবে জানি না। যদি ঝড়ে বাগানে ক্ষতি হয় তবে আমাদের মতো বাগানি যারা আছে তারা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ বছর লিচুর ফলনে বিপর্যয় হয়নি। প্রচণ্ড খরার (তীব্র তাপদাহে ) কারণে ফলন কিছুটা নষ্ট হতে পারে। তবে এবারে লিচু লক্ষ্যমাত্রার থেকে অনেক বেশি আবাদ করা হয়েছে। কৃষি কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক বাগান পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছেন।