বাংলাদেশের প্রথম সয়েল আর্কাইভের যাত্রা শুরু হয়েছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে (খুবি)। বনবিভাগের সাথে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে ও জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা এফএও-এর কারিগরি সহায়তায় এবং যুক্তরাষ্ট্রের ইউএসএআইডি’র আর্থিক সহযোগিতায় এই আর্কাইভের উদ্বোধন করা হয়েছে।
সোমবার (৮ অক্টোবর) দুপুরে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের ২০ফুট ভূ-গর্ভে স্থাপিত এ আর্কাইভের উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধনের আগে উপাচার্য বলেন, ‘দেশের প্রথম এ সয়েল আর্কাইভ স্থাপন একটি বিশেষ উদ্যোগ। এর ফলে এক জায়গা থেকেই দেশের সমগ্র অঞ্চলের মাটির প্রকারভেদ, গুণাগুণসহ নানা তথ্য উপাত্ত জানা যাবে।
তিনি বলেন, ‘এই আর্কাইভ বনবিভাগ, কৃষি বিভাগ, পরিবেশ বিভাগ, মৃত্তিকা সম্পদ বিভাগসহ কৃষির সকল সেক্টরের জন্য গবেষণার একটি নতুন জায়গা তৈরি করবে। এর ভিত্তিতে দেশে কোন এলাকায় কী ধরনের মাটিতে কী ধরনের গাছ, ফসল ফলানো যাবে তার উপযোগিতা নির্ধারণ সহজ হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অনেক প্রজাতির গাছ হারিয়ে যাচ্ছে। হিজল, বৈন্যা, তমালসহ বহু গাছ এখন আর চোখে পড়ে না। এখনকার শহুরে শিক্ষার্থীরা ধান, পাটগাছ চেনে না। বেঁচে থাকার জন্য, পরিবেশের জন্য বৃক্ষ অপরিহার্য।’ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ লাগিয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে বৃক্ষের জাদুঘর তৈরির আহবান জানান উপাচার্য।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক সাধন রঞ্জন ঘোষ, জীববিজ্ঞান স্কুলের ডিন অধ্যাপক এ কে ফজলুল হক, বাংলাদেশ বন বিভাগের খুলনা সার্কেলের বন সংরক্ষক মোঃ আমীর হোসেন চৌধুরী ও এফওএ’র আন্তর্জাতিক পরামর্শক ড. ক্রিস্টফার জনসন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেষ্ট্রি এন্ড উড টেকনোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মোঃ ইনামুল কবীর। সেমিনারে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে নিবন্ধ উপস্থাপন করেন খুবির ফউটে ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক ড. মাহমুদ হোসেন ও বিএফআই প্রকল্পের ন্যাশনাল কো-অর্ডিনেটর মোঃ জহির ইকবাল।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধান, বাংলাদেশ বন বিভাগ, মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন বিভাগ, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেষ্ট্রি এন্ড উড টেকনোলজি বিভাগের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
এই সয়েল আর্কাইভে বাংলাদেশ ফরেষ্ট ইনভেন্টরি প্রকল্পের আওতায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের এক হাজার ৬৯৮টি প্লটের চার হাজার ২২৫টি মাটির নমুনা সংগৃহিত রয়েছে, যা মাটি নিয়ে নানামুখী গবেষণার দ্বার উম্মোচিত করবে।