উত্তর পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও পূর্ণিমার প্রভাবে বৃহত্তর খুলনা বিভাগের উপকূলীয় নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বাঁধ উপচে পানি ঢুকছে লোকালয়ে। উপকূলজুড়ে বাঁধ ভাঙনের শঙ্কায় সময় গুনছে সবাই।
মঙ্গলবার (২৫ মে) সকাল থেকেই খুলনাঞ্চলে ঝড়ো হাওয়াসহ মাঝারি বৃষ্টিপাত হয়।
হঠাৎ করেই বিকালের পর থেকে খুলনার উপকূলীয় অঞ্চল ও আশপাশের নদ-নদীগুলোতে পানি বাড়তে শুরু করেছে। নদীর পানি বেড়ে বাঁধ উপচে পানি ঢুকছে লোকালয়ে। পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উপকূলের মানুষের মধ্যে বাড়ছে শঙ্কা। উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষেরা ভয় পাচ্ছে, পানি বাড়লেই যেকোনো সময় বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকে যেতে পারে। সেই সাথে জলোচ্ছ্বাসের ভয়ও তাড়া করছে তাদের।
খুলনা আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ আমিরুল আজাদ বার্তা২৪.কম কে বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস যখন উপকূল অতিক্রম করবে, তখন পূর্ণিমার প্রভাব থাকবে। ঘূর্ণিঝড় ও পূর্ণিমা একই সময়ে হওয়ায় জলোচ্ছ্বাস হবার আশঙ্কা রয়েছে।
উপকূলীয় অঞ্চলে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, খুলনার উপকূলীয় অঞ্চল কয়রা সদর, উত্তর বেদকাশী ও দক্ষিণ বেদকাশীর বিভিন্ন স্থানে নদীর পানি বেড়ে বেড়িবাঁধের ওপর উপচে পড়ছে। এছাড়া সাতক্ষীরার গাবুরা ও বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জে বাঁধ উপচে পানি ঢুকছে লোকালয়ে। এতে কয়েক হাজার উপকূলীয় পরিবার বিপাকে পড়েছে।
কয়রার বাসিন্দা চিত্তরঞ্জন গোলদার বলেন, এখনি বাঁধ উপচে পানি ভিতরে প্রবেশ করছে। যে কোন মুহূর্তে বাঁধ ভেঙে এলাকা প্লাবিত হতে পারে। রাত জেগে আমরা বাঁধ পাহারা দিব। বাঁধে ফাটল দেখা দিলেই আমরা সেখানে মাটি দেবো।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জী বলেন, খুলনার উপকূলীয় নদীতে স্বাভাবিকের থেকে কিছুটা পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ধারণা করা যাচ্ছে, পানি আর বাড়বে না। ডেঞ্জার লেভেল ক্রস করেনি এখনো। খুলনার মধ্যে শুধুমাত্র কয়রা উপজেলার বাঁধগুলো দুর্বল। অন্যসব উপজেলার বাঁধগুলো জোয়ারের পানির চাপে ভাঙার সম্ভাবনা নেই। শুধু কয়রা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। জোয়ারের পানিতে বাঁধ উপচে পানি আসার কথা শুনেছি। তবে পানি আর বাড়ার সম্ভাবনা তেমন নেই বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, বৃহত্তর খুলনার উপকূলীয় দাকোপ-কয়রা-পাইকগাছা-সাতক্ষীরা-বাগেরহাট-মংলার উপকূলের লক্ষাধিক মানুষ নদীর পানি বাড়ায় বাঁধ ভাঙনের আতঙ্কে প্রহর গুনছে।