নাম উল্লেখ না করে গ্রেফতার হওয়া মামুনুল হকসহ অন্যান্য আলেমদের মুক্তির দাবি করেছেন বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ। তিনি বলেছেন, "আলেমরা কিন্তু সাংঘাতিক নিপীড়নের মধ্যে আছে। যে সমস্ত আলেমরা রিমান্ড, গ্রেফতারের সম্মুখীন হয়েছে আপনি তাদেরকে মুক্তি দিন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এখানে আছেন, আপনি তাদেরকে মুক্তি দিন।"
মঙ্গলবার (১৫ জুন) সকালে জাতীয় সংসদে হজ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত বিলের ওপর আনিত সংশোধনী প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি একথা বলেন। এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশন শুরু হয়।
হারুনুর রশীদ বলেন, ধর্মীয় স্কলার যাদেরকে আমরা আলেম বলি। আলেম অর্থ এটুকু বুঝি যারা কোরআন এবং হাদিসের সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা কারি। আজকে তারা কিন্তু সাংঘাতিক নিপীড়নের মধ্যে আছে। যে সমস্ত আলেমরা রিমান্ড, গ্রেফতারের সম্মুখীন হয়েছে আপনি তাদেরকে মুক্তি দিন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এখানে আছেন আপনি তাদেরকে মুক্তি দিন। দেশে না হলে উদ্বেগ এবং ভারসাম্যহীন অবস্থার তৈরি হবে।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, সারা বাংলাদেশের ধর্মীয় তাফসীর বন্ধ করে দিয়েছেন। সংবিধানে বলা হচ্ছে কোন বাধা দেওয়া হবে না। কিন্তু গত চারদিন যাবত আমাদের একজন বিশিষ্ট আলেম মোহাম্মদ আদনান সেসে নিখোঁজ, তার পরিবার তার সন্ধান দাবি করছে।
ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, পরিমণির মামলা নেয়া হয়েছে,অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু সেই সৌভাগ্য হয়নি তোহার পরিবারের, সেই সৌভাগ্য হয়নি বাংলাদেশের ৬০৪ টি পরিবারের। যারা দীর্ঘদিন ধরে নিখোঁজ তাদের ব্যাপারে না স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কিছু বলতে পারছে না স্থানীয় পুলিশ স্টেশন কিছু বলতে পারছে, না সে ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, সরকার যখন বলছে তারা পরকীয়া চলে গেছে, ঋণের বোঝা আছে, পারিবারিক কলহের জেরে চলে গেছে। তখন ২০১৯ সালের এপ্রিলে ফ্রান্স ভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন এফআইডিএইচ বলছে গুমের এই ঘটনাগুলো বিক্ষিপ্ত, বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়। এগুলো যারা রাষ্ট্র পরিচালনা করে, তাদের সমন্বিত কৌশল ও কার্যকরের অংশ। এই ঘটনাগুলো নিয়মতান্ত্রিক ও রাষ্ট্রীয় নীতিমালার পরিপন্থী।
এফআইডিএইচ বলছে যেহেতু বেশিরভাগ ভুক্তভোগীকে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে টার্গেট করা হয়, তাই কাজগুলো মানবতাবিরোধী অপরাধ। অর্থাৎ গুমকে তারা মানবতাবিরোধী অপরাধ বলছে। সরকারের দায়িত্ব অভিযোগগুলো তদন্ত করা। তদন্তের ভিত্তিতে তারা কোথায় হারিয়ে গিয়েছে সেটা বের করা।
বারবার বলা হয় বাংলাদেশের বিরাজনীতিকরণ করা হচ্ছে। বিরাজনীতিকরণ করা হচ্ছে এই অর্থে যে যদি কেউ যখন কোন ব্যক্তিকে গুম করা হয়, তার পরিবার পায়না বলে আমার ছেলে রাজনীতির সাথে যুক্ত নয়। তারমানে সরকারি দল না করলে সরকারি মতের সাথে না মিললেই সে হাওয়া হয়ে যেতে পারে, নাই হয়ে যেতে পারে, এটাই বিরাজনীতিকরণ।