বাংলাদেশের সীমান্ত অঞ্চলগুলোর মতো করোনার বিপদ বাড়ছে চট্টগ্রামে। করোনার বিপজ্জনক শঙ্কা চট্টগ্রামের সর্বত্র। বৃহত্তম চট্টগ্রামের জেলা শহরগুলোর মতো উপজেলা ও গ্রাম-গঞ্জে ক্রমবর্ধিষ্ণু হারে ছড়াচ্ছে সংক্রমণ।
প্রাপ্ততথ্য অনুযায়ী সবচেয়ে মারাত্মক পরিস্থিতি উত্তর চট্টগ্রামে, সেখানকার চার উপজেলায় রোগীর সংখ্যা বেড়েছে গত এক সপ্তাহে। উদ্বেগ বাড়ছে সাধারণ মানুষ ও স্বাস্থ্য বিভাগ সংশ্লিষ্টদের মধ্যে। যে চারটি উপজেলায় পূর্বের চেয়ে রোগী বেড়েছে, সেখানে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের কঠোরতা আরোপের নির্দেশনা দিয়ে সতর্ক অবস্থান গ্রহণ করতে বলা হয়েছে।
উদ্বেগজনক বিষয় হলো, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের একদল গবেষকের গবেষণা প্রতিবেদনে চট্টগ্রামে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের দুই রোগী পাওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। দুই রোগীর একজন নগরীর এবং অপরজন ফটিকছড়ির বাসিন্দা।
সরকারি হিসাবে, বিগত সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি রোগী পাওয়া গেছে উত্তর চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলায়। স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যে উত্তর চট্টগ্রামের পাশাপাশি অবস্থিত চারটি উপজেলাতেই চোখে পড়ার মতো রোগী পাওয়া গেছে। অন্য উপজেলাগুলো হলো হাটহাজারী, রাউজান ও রাঙ্গুনিয়া। ফটিকছড়ি উপজেলায় করোনায় আক্রান্ত রোগী ১ হাজার ১৫৯ জন, হাটহাজারীতে ২ হাজার ৬২৮ জন, রাউজানে ১ হাজার ৪০৫ জন। এসব উপজেলায় প্রবাসীর সংখ্যাও বেশি। উপজেলাগুলো পার্বত্য চট্টগ্রাম ঘেঁষা, যার পরেই ভারতের সীমান্ত রয়েছে।
এসব এলাকার একাধিক সূত্র বার্তা২৪কম-কে জানিয়েছে, প্রশাসনের পক্ষে অভিযান ও জরিমানা করা হলেও মানুষ সচেতন হচ্ছে না। মানুষের সচেতনতার অভাবের কারণে পরিস্থিতি মারাত্মক হচ্ছে। এমন ফ্রিস্টাইল পরিস্থিতি চলতে থাকলে ক্রমবর্ধমান করেনা অচিরেই সোশ্যাল ট্রান্সফরমেশনের মাধ্যমে ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়বে।
সংক্রমণ বাড়লে ঝুঁকি না নিয়ে স্থানীয়ভাবে লকডাউনের নির্দেশনা দিয়েছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও। সম্প্রতি সংসদ ভবনে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এমন নির্দেশনা দেওয়া হয় বলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান। বলা হয়, এলাকায় চলাচলসহ অন্যান্য কার্যক্রম স্থানীয়ভাবে বন্ধ করে করোনা নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করতে।
বিশেষ করে সারা দেশেই গত কয়েক দিনে করোনায় মৃত্যু ও আক্রান্তের হার বৃদ্ধি পাওয়ায় মহামারি নিয়ে নতুন করে আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। চট্টগ্রাম অঞ্চলে অধিক সংক্রমণের ক্ষমতা সম্পন্ন করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তের খোঁজ পাওয়ার ঘটনা ও স্থানীয়ভাবে সংক্ষমণ বৃদ্ধি আশঙ্কা আরও বাড়িয়ে তুলেছে।