চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার গড়গড়ি গ্রামে সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন হওয়ায় আব্দুর রাজ্জাক (৫০) নামে এক করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
রোববার (২০ জুন) সকাল ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, আব্দুর রাজ্জাক আলমডাঙ্গা উপজেলার জেহালা ইউনিয়নের গড়গড়ি গ্রামের হঠাৎপাড়ার শাহাজুদ্দিনের ছেলে। তিনি কৃষি কাজের পাশাপাশি গরুর ব্যবসা করতেন।
তিনি কিছু দিন ধরে জ্বর, ঠান্ডা ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগে ভুগছিলেন। গত ১৬ জুন র্যাপিড টেস্টে তার করোনা পজিটিভ হয়। পরে তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। এরপর আব্দুর রাজ্জাক ছাড়পত্র নিয়ে বাড়িতে আইসোলেশনে ছিলেন।
বাড়িতে আসার পর উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে তাদের বাড়ি লকডাউন করে দেন। এতে গ্রামের অন্যান্য মানুষের কটূক্তি ও সামাজিকভাবে হেয়পতিপন্ন হওয়ায় রোববার সকালের কোনো এক সময় তিনি ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।
তার স্ত্রী ময়না খাতুন বলেন, আমার স্বামীর করোনা শনাক্তের পর হাসপাতালে ছিল। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। বাড়িতে আসার পর আমরা সবাই তার থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলাম। হাসপাতালে থাকলে আমার স্বামী আত্মহত্যা করতেন না।
জেহালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল হক রোকন বলেন, তিনি করোনায় আক্রান্ত ছিলেন। তার বাড়িটি উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে লকডাউন করে দেওয়া হয়েছিল। এরপর থেকে এলাকার লোকজন বিভিন্ন মন্তব্য করতেন। সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন হওয়ায় অভিমানে আব্দুর রাজ্জাক সকালে আত্মহত্যা করেছেন।
আলমডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হাদী জিয়াউদ্দিন আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গত ১৬ তারিখে নমুনা দিলে ওই দিনই তার করোনা পজিটিভ হয়। তিনি বাড়িতে আইসোলেশনে ছিলেন। সকালে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে শুনেছি।
আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর কবির বলেন, গড়গড়ি গ্রামে একজন করোনা আক্রান্ত রোগী আত্মহত্যা করেছে বলে শুনেছি। তিনি জ্বর, শ্বাসকষ্টজনিত রোগে ভুগছিলেন। তাই আত্মহত্যা করেছেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।