কুষ্টিয়া গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে করোনা আক্রান্ত হয়ে পাঁচজনের এবং উপসর্গ নিয়ে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও একজনের মৃত্যু হয়।
শনিবার (২৬ জুন) বেলা ১১টায় কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. এম এ মোমেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, আক্রান্ত এবং উপসর্গ নিয়ে রোগী ভর্তির চাপ প্রতিদিনই বাড়ছে। এ পর্যন্ত হাসপাতালে ১৮৮ জন রোগী ভর্তি আছেন।
ডা. এম এ মোমেন জানান, হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত এবং উপসর্গ নিয়ে রোগী ভর্তির সংখ্যা এখানে প্রতিনিয়ত বাড়ছে। চাপ সামলাতে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীদের বেগ পোহাতে হচ্ছে। উপজেলা সদর এমনকি জেলার দূর-দূরান্ত থেকেও করোনা আক্রান্ত হয়ে এবং উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ছুটে আসছে। আপাতত হাসপাতালে চিকিৎসক ও জনবল যা আছে তা দিয়ে রোগীর চাপ সামাল দেয়া গেলেও এভাবে যদি চাপ বাড়তেই থাকে তাহলে অতিরিক্ত লোকবল প্রয়োজন হবে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে হাসপাতালে অক্সিজেন সংকট দেখা দেয়ার আশঙ্কা রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যারা হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন তাদের প্রায় প্রত্যেকেরই অক্সিজেন সাপোর্ট দিতে হচ্ছে। এদিকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট এই হাসপাতালটিতে এখন আর করোনা ছাড়া অন্য কোনো রোগী ভর্তি নেয়া হচ্ছে না। হাসপাতালটি করোনা ডেডিকেটেড ঘোষণা করে বহির্বিভাগ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। অন্য রোগীদের পার্শ্ববর্তী ডায়াবেটিস ও আদ্বদীন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে বলা হচ্ছে।’
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় ২২৩টি নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে জেলায় নতুন করে ৭৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৩৫ দশমিক ৬৪। এ নিয়ে জেলায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৯৯০ জনে। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন পাঁচ হাজার ২৩৪ জন। মৃত্যের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮১ জনে।
নতুন করে শনাক্ত হওয়া ৭৭ জনের মধ্যে কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় ৪৭ জন, দৌলতপুর উপজেলায় দুইজন, কুমারখালী উপজেলায় ২০ জন, ভেড়ামারা উপজেলায় একজন, মিরপুর উপজেলায় চারজন ও খোকসা উপজেলায় তিনজন।
এখন পর্যন্ত জেলায় ৫৮ হাজার ৯৫৫ জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য নেয়া হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদন পাওয়া গেছে ৫৭ হাজার ৭২৬ জনের। বাকিরা নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদনের অপেক্ষায় রয়েছেন। বর্তমানে কুষ্টিয়ায় সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা এক হাজার ৫৭৬। এদের মধ্যে হাসপাতালে আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন আছেন ১৬৪ জন এবং হোম আইসোলেশনে আছেন এক হাজার ৪১২ জন।
এদিকে করোনা সংক্রমণ কমাতে গত ২০ জুন রাত ১২টা থেকে কুষ্টিয়া জেলা জুড়ে লকডাউন শুরু হয়েছে। ২৭ জুন রাত ১২টা পর্যন্ত এ লকডাউন চলবে।